সুসংবাদ প্রতিদিন
কাপ্তাইয়ে কফির উন্নত দুটি জাত উদ্ভাবন
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
রাঙামাটির কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এবার এরাবিকা ও রোবেস্টা নামের দুটি উন্নত কফির জাত উদ্ভাবন করেছে। এছাড়াও কফি চাষের পাশাপাশি এখানে কাজু বাদাম চাষ হ”েছ। রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ‘প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালে রাঙামাটির কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের ২নং ব্লকে প্রায় ২ একর জমিতে এরাবিকা ও রোবাস্টা জাতের কফিসহ কাজুবাদামের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করা হয় এবং এরইমধ্যে প্রকল্পের রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলার ৯০ জন কৃষককে কফি ও কাজুবাদামের আধুনিক কলাকৌশল চাষ বিষয়ে অবহিত করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। তিনি জানান, চলতি বছরে প্রায় সবক’টি কফি চারায় ভালো ফলন হয়েছে। পাহাড়ে কফির চাষের এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে কৃষিক্ষেত্রে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। কফি ও কাজুবাদাম চাষের বিষয়ে রাইখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ২নং রাইখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শৈবাল সরকার সাগর বলেন, আমি রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে গত বছর ২ একর কৃষি জমিতে রোবেস্টা জাতের কফি চাষ করেছি। কিছু চারায় এরইমধ্যে ফল এসেছে। আশা করছি আমরা কৃষকরা লাভবান হবো। তিন পার্বত্য জেলার কফি ও কাজু বাদাম চাষ প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়ক ড. আলতাফ হোসেন জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পটি সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৫ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে বর্তমানে সফলতার দ্বারপ্রান্তেই রয়েছি। ৩ বছরের মাথায় কফিতে ভালো ফলন এসেছে এটা আমাদের জন্য বিশাল একটি সুখবর। পাহাড়ের আবহাওয়া ও মাটি কফি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। কফি ও কাজুবাদাম চাষে পাহাড়ের এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে কৃষি ক্ষেত্রে একটি আমূল পরিবর্তন আসবে বলে আশা কর্মকর্তার। সম্প্রতি জেলার রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে কফি ও কাজুবাদাম চাষের বাগান পরিদর্শন করে সš‘ষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করে তিনি বলেন, পাহাড়ের কৃষকদের মাধ্যমে ২৭টি উপযোগিতা যাছাই করে কফি ও কাজুবাদামের পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। এতে অধিকাংশ ব্লকে এরাবিকা ও রোবাস্টা দুটি উন্নত জাতের কফি চাষে সফল হয়েছেন এখানকার বিজ্ঞানীরা। পাহাড়ে কফির উন্নত দুটি জাত উদ্ভাবনের সফলতাকে কাজে লাগাতে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে কৃষকদের নিয়ে মাঠ দিবস পালনসহ তাদের কফি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হ”েছ। পাহাড়ে চাষ উপযোগী ফসলের জাত এবং অন্যান্য কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে পাহাড়ি এ অঞ্চলে কৃষির উন্নয়নে ১৯৭৬ সালে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে প্রায় ১০০ একর জমিতে গড়ে ওঠে রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। কফি চাষের এ সফলতাকে কাজে লাগাতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান তিনি। রাঙামাটির রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রায় ২ একর জমিতে এরাবিকা ও রোবাস্টা জাতের কফির চাষে সফলতাকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারলে কফি উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনসহ উৎপাদিত কফি দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে আশা বিজ্ঞানীদের। এরইমধ্যে এ গবেষণা কেন্দ্রে বিভিন্ন ফলের জাত উদ্ভাবন করে সফলতা অর্জন করেছেন এ কেন্দ্রে কর্মরত বিজ্ঞানীরা। এখানে রয়েছে নানা ধরনের দেশি-বিদেশি নতুন উদ্ভাবনকৃত ফল-ফলাদির বাগানের সমারোহ। পাহাড়ের কৃষি উৎপাদনের বাতিঘর রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে এবার কফি এবং কাজুবাদাম চাষ এবং গবেষণা করে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে এ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।