প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নানা আলোচনা- সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও গতকাল বাজারে ইলিশ মাছের পেটে ডিম পাওয়া গেছে। তা হলে প্রশ্ন হলো ইলিশ কেন ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় ডিম ছাড়েনি। তাহলে কি এই নিষেধাজ্ঞার সময়টা যথার্থ ছিল না। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হতে না হতে সকালে ইলিশের মোকামগুলোতে ইলিশ মাছের এতো সরবরাহ হয় কীভাবে। সাগরের গিয়ে ইলিশ মাছ আহরণ করে মোকামে আনতে অন্তত ১-২ দিন সময় লাগে। অথচ মাত্র ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে ইলিশ মাছ আড়তে তুলল জেলেরা। আড়তদারদের ধারণা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদে অসাধু জেলেরা ইলিশ মাছ সংগ্রহ করে ফ্রিজে রেখেছে। সাগরে গেছে জেলেরা। তাদের ফিরতে অন্তত ১-২ দিন সময় লাগার কথা। এর আগে অভ্যন্তরীণ নদ-নদী থেকে কিছু ইলিশ ধরা পড়তে পারে। তবে তার পরিমাণ কখনোই শত শত মণ হওয়ার কথা না। একাধিক আড়ত মালিক বলেন, ‘মাত্র ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে আসা এই মাছ কোনোভাবেই শুক্রবার ভোর রাতের নয়। এইটুকু সময়ে এত ইলিশ ধরা অসম্ভব। নিষেধাজ্ঞার সময়ে চুরি করে ধরা হয়েছে এসব ইলিশ। বরফ দিয়ে নয়তো ফ্রিজে সংরক্ষণের পর গতকাল সকালে তোলা হয়েছে মোকামে।
প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় গত ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় শেষ হয় এ নিষেধাজ্ঞা। এরপরই জাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নামেন জেলেরা।
মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ীরা জানান বাজারে আসা অধিকাংশই ইলিশ হালকা লালচে। সাধারণত বরফ দিয়ে ৪-৫ দিনের বেশি রাখলে ইলিশের চেহারা এমন হয়। দেখেই বোঝা যায়, এগুলো নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে ধরা। রাতে অথবা চুরি করে গোপনে ধরা হয়েছে। অভিযানের ভয়ে বাজারে না এনে বরফ দিয়ে অথবা বড় ফ্রিজে সংরক্ষণের পর আনা হয়েছে মোকামে।’
ব্যবসায়ীরা আরো জানান ‘নিষেধাজ্ঞার সময় চোরাইভাবে মাছ শিকার করে সংরক্ষণ এবং নিষেধাজ্ঞা শেষে মোকামে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে কিছু অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীও জড়িত।’ যেসব মাছ গতকাল রাজারে এসেছে তার সিংহভাগই মা ইলিশ। প্রায় সব মাছের পেটেই ডিম। বহু বছর ধরে ব্যবসা করছি। সরকার ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে অভিযান চালাল। অথচ অভিযান ফাঁকি দিয়ে ধরা হলো মণকে মণ ইলিশ। তাহলে এ নিষেধাজ্ঞার ফল কী?’ নিষেধাজ্ঞা শেষে এত কম সময়ে এত পরিমাণ ইলিশ ধরা সম্ভব নয়। এগুলো প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলেরা লুকিয়ে নদী থেকে মেরেছে। তবে জেলেরা এ কাজগুলো ঠিক করেনি।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ৫-৬ ঘণ্টায় ইলিশ ধরা পড়ার ব্যাপারে মৎস্য কর্মকর্তারা জানান ‘বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর লুকিয়ে ইলিশ ধরা প্রবণতা অনেক কমেছে।
তবে জেলে ও আমাদের সবাইকে আরও অনেক সচেতন হতে হবে। ইলিশ মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়ে মাছ না শিকার করা ও মাছ কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবেই আমরা শতভাগ সফল হতে পারব। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা বাজারে তুলেছে। ইলিশ মাছ বেশ কিছুদিন হিমাগারে রাখলে তার রং লালছে হয়ে যায়। গতকাল বাজারগুলোতে লালচে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে।
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে শত শত মণ ইলিশ আসতে থাকে দেশের বিভিন্ন মোকামে। এত কম সময়ে এই বিপুল পরিমাণ ইলিশের জোগানে বিস্মিত অনেকে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষে মাছ ধরতে