সুসংবাদ প্রতিদিন

সিরাজদিখানে আমনের বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে আমন ধানের সোনালি শীষে ভরে গেছে কৃষকের ক্ষেত। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি ধানের শীষ। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৮৯০ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৫৯০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ বেশি হয়। মুন্সীগঞ্জ জেলায় ছয় উপজেলায় এবছর ১ হাজার ৯৮৪ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে সিরাজদিখান উপজেলাতেই ২ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। সরকারি হিসাবে এরই মধ্যে ৮০ হেক্টর জমির আমন কর্তন হয়, তাও সিরাজদিখানে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ জানান, মাটির অবস্থা এবং নদীর অববাহিকাসহ নানা কারণে সিরাজদিখানে আমন চাষ ভালো হচ্ছে। আর এবছর আবহাওয়া আমনের অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এবছর সিরাজদিখানে হেক্টর প্রতি ৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। মাঠের যেদিকেই চোখ মেলে দেখা যায় আমন ধানের সবুজের মাঝে সোনালি ঢেউ। যা দেখে আমন ধান চাষিদের প্রাণেও আনন্দের ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহের প্রতীক্ষা, প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা নিশ্চিত। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৫০ ভাগ ধানগাছ সোনালি শীষ নিয়ে মাটির জমিনে দাঁড়িয়ে আছে। এ ধান কদিন পরেই কৃষকের বাড়িতে গেলে, ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। রাত জেগে গৃহিণীরা ধানসিদ্ধ করে সকাল থেকে মাঠে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করবেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা একটু আগাম আমন ধান চাষ করেছেন, তাদের ধানে পাক ধরেছে। বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে কয়েকদিন পরেই শুরু হবে পুরোদমে ধানকাটা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবারে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় বাম্পার আমন ধান ফলন অর্জিত হয়েছে। বাংলা কার্তিক মাসের শেষের দিকে আমন ধান কাটাই-মাড়াই শুরু হবে। গত বছরের মতো এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় উপজেলাজুড়ে কৃষকের মুখে হাসির জোয়ার বইছে। ইছাপুরা ইউনিয়নের কৃষক রহমত ও ভবন দাস জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পোকাণ্ডমাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। চন্দনধূল গ্রামের কৃষক মো. জুয়েল শেখ বলেন, এবছর আমি ৮৫০ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ করেছি আমার ধান ভালো হয়েছে। ফসলের ক্ষেতে রোগ কিংবা পোকার কোন আক্রমণ ছিল না। উৎপাদন ভালো হয়েছে। দাম ভালো পেলে লাভবান হতে পারব। জৈনসার ইউনিয়নের কৃষক মাসুম ঢালী জানান, ১৭০ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ করেছি ফসলের খেতে রোগ কিংবা পোকার কোনো আক্রমণ ছিল না, তাই ফলনে আমি খুশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, এ বছর সুন্দর আবাদ হয়েছে। আমরা যেভাবে বলেছি সেভাবেই হয়েছে। আশা করছি, আমরা যা ধারণা করছি তার চেয়ে বেশি ফসল পাব। আর আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি হেক্টরে কৃষকরা ধান পাবে সাড়ে ৪ দশমিক ৫ মেট্রিক টন।