ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

মূল ফটকের সামনের রাস্তা শিক্ষার্থীদের জন্য মরণফাঁদ!

মূল ফটকের সামনের রাস্তা শিক্ষার্থীদের জন্য মরণফাঁদ!

রাজধানী পুরান ঢাকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ৭ একরের ছোট ক্যাম্পাসে প্রতিদিন ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর আসা-যাওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বিকল্প রাস্তা অথবা ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের।

প্রায়ই রাস্তা পার হতে গিয়ে নানা রকম দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ পথচারীরাও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের রাস্তাটি শিক্ষার্থীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসের ধাক্কায় মৃত্যুসহ গুরুতর দুর্ঘটনার নজির রয়েছে। তারপর দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও যথাযথ কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। গেল বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বাসের ধাক্কায় নিহত হন মোহাম্মদ বুলবুল নামে এক পথচারী। একইসাথে গুরুতর আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী আকাশ দাস ও এক রিকশাচালক। এর কিছুদিন আগেই প্রধান ফটকে মিনিবাস বাহাদুরশাহ পরিবহনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক। বাস এবং রিকশার ধাক্কায় শিক্ষার্থীদের হতাহতের ঘটনা অহরহ ঘটে চললেও টনক নড়েনা প্রশাসনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ১৮ পেরিয়ে উনিশে পড়লেও গুরুতর এই সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। পরিকল্পনা আর আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ। সরেজমিন দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে চারটি রাস্তা মিলিত হয়ে চৌরাস্তার রূপ নিয়েছে। সদরঘাট-গুলিস্তান যাওয়ার জন্য টমটম গাড়ি, ভ্যান রিকশার আধিক্য অনেক বেশি। এদিকে যাত্রাবাড়ী এবং ডেমরা যাওয়ার জন্য বাহাদুর শাহ পরিবহণ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে অবিরাম। এছাড়া নদীপথে (সদরঘাট) চলাচলকারী মানুষের জন্য এই রাস্তা ব্যবহৃত হয়। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি বেশিরভাগ সময়ই থাকে যানজটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের দুই পাশে পাঠাও’র বাইক ও রিকশা, বিভিন্ন ধরনের টং দোকান (লেবুপানি, হকার, দই-চিড়া) দখল করে রেখেছে। এদিকে মূল ফটকের পাশেই ভিক্টর ক্লাসিক, সাভার পরিবহণ, তানজিল, বিহঙ্গ, আজমেরী গ্লোরী বাসের স্ট্যান্ড হওয়ায় সারাক্ষণ যাত্রী ওঠানামার কাজে ব্যস্ত থাকায় যানজট আরো প্রকট হয়। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে প্রধান ফটকের দুই পাশে কোনো গতিরোধক ও ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় রাস্তা পারাপারে আতঙ্কে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। রিকশা-সিএনজির ধাক্কা যেনো নিত্যসঙ্গী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া জোত্যি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে কোনো ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় রাস্তা পারাপারে সব সময় শঙ্কিত থাকতে হয়। রাস্তায় গতিরোধক না থাকায় গাড়ির গতি থাকে অনেক বেশি। প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। এদিকটায় প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।

তবে ফুটওভার ব্রিজের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি করপোরেশন থেকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও প্রকল্পটি কবে বাস্তবায়ন করা হবে এ বিষয়ে কোন তথ্য জানা যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামের (মিলনায়তনের) সংস্করণেকাজটি করবে বলে জানিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, অনেক আগেই সিটি কর্পোরেশনকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। তবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও দূর্ঘটনা এড়াতে, প্রধান ফটেকের সামনে নিরাপদ যাতায়াতের জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের সর্বোচ্চ নির্দেশনা দেয়া আছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত