ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অন্যরকম

রক্তলাল বুলগেরিয়ার আকাশ!

রক্তলাল বুলগেরিয়ার আকাশ!

ইউরোপের বলকান অঞ্চলের দেশ বুলগেরিয়ায় আকাশ হঠাৎ ছেয়ে গেছে টকটকে লাল রঙে! যেন কেউ রক্ত লেপে দিয়েছে। তা দেখেই চমকে গেছেন সবাই। রাতের আকাশ দেখে কেউ হা হয়ে তাকিয়ে ছিলেন, কেউ বলেছেন ভূতুড়ে কাণ্ড। কারো দাবি, এটি মহাপ্রলয়ের আগ-মুহূর্ত! সম্প্রতি দেশটির আকাশে প্রথমবারের জন্য দেখা মিলেছে অরোরা বোরিয়ালিসের, যা কিনা সুমেরুপ্রভা হিসেবেই পরিচিত। আর মেরুজ্যোতির কারণেই আকাশ রাতারাতি এমন টকটকে লাল হয়ে উঠেছে। সেই লাল আলো প্রতিফলিত হয়ে পড়ছে রাস্তায়, গাড়িতে। দেখে চমকে গেছেন মানুষজন। ঝটপট মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করে ফেলেছেন সেই অপরূপ নৈসর্গিক দৃশ্য। সামাজিক মাধ্যমে এসব দৃশ্য ভাইরাল হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে বুলগেরিয়ার উত্তর-পূর্ব অংশে দেখা গিয়েছিল অসামান্য এই মেরুজ্যোতির। তবে অল্পক্ষণের মধ্যেই তা গোটা বলকান অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু বুলগেরিয়া নয়, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, চেক রিপাবলিক, ইউক্রেন, পোল্যান্ড এবং স্লোভাকিয়াতেও দেখা গেছে সুমেরুপ্রভা। গত শনিবার রাতে ব্রিটেনের বেশ কিছু অংশেও উজ্জ্বল লালা-সবুজ অরোরা বোরিয়ালিসের দেখা মিলেছে। প্রকৃতির সেই আর্শ্চয সৃষ্টি দেখলে যেন সব জাগতিক জিনিস ভুলে যাওয়া যায়, দম বন্ধ করে শুধুই তাকিয়ে থাকতে হয়। চলতি বছরের শুরুতে অরোরা বোরিয়ালিস ভারতে প্রথমবারের মতো দেখা গিয়েছিল। লাদাখে এই বিরল দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। সাধারণত ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের সময় সৃষ্টি হয় মেরুপ্রভা। এই মহাজাগতিক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে যখন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ভারসাম্য কোনোভাবে নষ্ট হয়। তার ফলে পৃথিবীর উচ্চ এবং নিম্ন অক্ষাংশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে উজ্জ্বল প্রভা দেখা যায়। সুমেরুপ্রভা সাধরণত দেখা যায় উত্তর মেরুর কাছাকাছি এলাকাগুলোতে। কুমেরুপ্রভা বা অরোরা অস্ট্রালিস দেখা যায় দক্ষিণ মেরু সংলগ্ন এলাকায়। তবে কখনো কখনো নাতিশীতোষ্ণ এলাকাগুলোতেও মেরুপ্রভা দেখা যায়। সূর্য থেকে উৎপন্ন সৌর বায়ু কণার মিথস্ক্রিয়ার ফলেই সৃষ্টি হয় এই অপরূপ জ্যোতি। এই কণাগুলো পৃথিবীতে পৌঁছানোর আগে লাখ লাখ মাইল ভ্রমণ করে। নীলগ্রহে প্রবেশ করার পর পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এই কণাগুলোকে মেরু অঞ্চলের দিকে পরিচালিত করে। মেরুপ্রভার এই অনন্য রং নির্ভর করে বেশ কিছু জিনিসের ওপর। যেমন এই কণাগুলো বায়ুমণ্ডলের কোন গ্যাসের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ঘটাচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে জ্যোতির রং লাল হবে না সবুজ। সাধারণত নাইট্রোজেনের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া হলে মেরুজ্যোতির রং হয় টকটকে লাল। আর অক্সিজেনের ক্ষেত্রে সেই রং-ই হয়ে যায় উজ্জ্বল সবুজ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত