সুসংবাদ প্রতিদিন
কুমিল্লায় লালশাকে কৃষকের মুখে হাসি
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় লালশাক চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষক। জমি তৈরি থেকে বীজ রোপণের পর মাত্র ২০ থেকে ২২ দিনের মাথায় শাক বিক্রি করতে পারছেন তারা। এতে শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় অল্প সময়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া ও মনোহরপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জমি থেকে বিক্রির জন্য লালশাক সংগ্রহ করছেন কৃষকর। তারা সারিবদ্ধ হয়ে লালশাক তুলছেন। এ কাজে সমানতালে এগিয়ে এসেছেন নারীরাও। আবার কেউ ক্ষেত থেকে তোলা লালশাক একত্রিত করে লালশাকের আঁটি বাঁধছেন। কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ৩৬ শতক জমিতে লালশাক চাষ করেছি। এতে আমার সাড়ে ৮ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে আমার জমিতে চাষ করা লালশাক বিক্রির যোগ্য হয়েছে। আর এসব লালশাক বিক্রির যোগ্য হতে সময় লেগেছে মাত্র ২০ থেকে ২২ দিন। এখন আমি আমার এই জমির লালশাক পাইকারদের কাছে সাড়ে ২৪ হাজার টাকা বিক্রি করে দিয়েছে। এতে আমার সব খরচ বাদ দিয়ে ১৬ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উৎপাদিত লালশাক বিক্রির পর এই প্রস্তুত করে তিনি আলু ও মিষ্টি কুমড়া চাষ করবেন। এছাড়া লালশাকের চাষাবাদ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় কৃষক সুলতান আহমেদ, সাহেদ আলী, জব্বার মিয়া, লোকমান হাজারী, সাদেক আহাম্মেদ ও জলিল জামানের সঙ্গে। তারা জানান, জমিতে লালশাকের চাষাবাদ করে বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাচ্ছে। বাজারে লালশাকের চাহিদা রয়েছে। এর চাষাবাদে তেমন একটা সার প্রয়োগ করতে হয় না। তবে জমি প্রস্তুতের সময় শুকনো গোবর ও জৈব সার দিলে লালশাকের ফলন অধিক হয়। তারা শুধু লালশাক নয়, অন্যান্য শাকসবজিও চাষ করে লাভবান হচ্ছেন বলে জানান। লালশাকের ক্রেতা পাইকার আবদুল কাদের বলেন, আমরা এখানকার কৃষকদের উৎপাদিত লালশাক জমি থেকে কিনে কুমিল্লা, ফেনী ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার আড়তগুলোতে বিক্রি করে আসছি। যেখানে ভালো দাম পাই, সেখানেই লালশাক বিক্রি করতে নিয়ে যাই। বর্তমানে বাজার ভালো হওয়ায় আমরা ও কৃষক উভয়ে লাভবান হচ্ছি। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মজিবুর রহমান বলেন, লালশাক চাষে তেমন একটা শ্রম দিতে হয় না। জমি প্রস্তুত করে বীজ রোপণ করার ২০ থেকে ২৫ দিনের মাথায় লালশাক বিক্রি করা যায়। তেমন সারও দিতে হয় না। এছাড়া লালশাক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তাই ছোট-বড় সবাই এটা খুব পছন্দ করে। তাই লালশাক চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি অতিরিক্ত উৎপাদন করেও বাজারে বিক্রির পর বাড়তি আয় করাও সম্ভব। তিনি বলেন, প্রতি বছর ১ বিঘা জমিতে ৪০ হাজার টাকা লাভ করা যায়। পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হলে খরচ কম লাগে। কীটনাশক লাগে না। জমি তৈরির সময় ভালো করে সার দিলে ফলন অনেক ভালো হয়। তবে দুই-তিন দিন অন্তর অন্তর পানি দিলে ফলন আশাতীত ভালো হয়। বর্তমান বাজারে লালশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষক লালশাক চাষে মনোযোগী হয়েছেন। অন্যান্য উপজেলার মতো ব্রাহ্মণপাড়ায়ও ১২ মাস লালশাক চাষ হচ্ছে।