তিন প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে অধীর অপেক্ষায় আছেন চট্টগ্রামবাসী। টানেল উদ্বোধনের পর আরো তিন প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে লোকজনের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। ১৪ নভেম্বরই হচ্ছে চট্টগ্রামবাসীর জন্য জন্য মাহেন্দ্রক্ষণ। নগরবাসীসহ সর্বস্তরের মানুষ বলছেন, রেকর্ড উন্নয়ন কাজে বদলে গেছে চট্টগ্রামের চেহারা। তারা উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখারও জোর দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত উড়াল সড়ক বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন উপলক্ষ্যে পতেঙ্গায় সুধী সমাবেশ হচ্ছে। আয়োজন করেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ১৪ নভেম্বর সেখানেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ উড়াল সড়ক উদ্বোধন করবেন। একই দিন প্রধানমন্ত্রী আরো দুটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সিডিএ’র বাস্তবায়ন করা প্রকল্পগুলো হচ্ছে- নগরীর চন্দনপুরা থেকে কালামিয়া বাজার পর্যন্ত সংযোগ সড়ক বাকলিয়া এক্সেস রোড এবং ডিটি-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক।
সিডিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্বোধনী আয়োজনের প্রস্তুত প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবীসহ ১ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সেখানে মঞ্চ তৈরি করা হবে। গণভবন থেকে যুক্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য একাধিক মাল্টিমিডিয়া স্ক্রিন স্থাপন করা হচ্ছে।
আগামী মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দক্ষিণ প্রান্ত পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন ভেন্যুতে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী আরো দুটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সিডিএ’র বাস্তবায়ন করা প্রকল্পগুলো হচ্ছে- নগরীর চন্দনপুরা থেকে কালামিয়া বাজার পর্যন্ত সংযোগ সড়ক বাকলিয়া এক্সেস রোড এবং ডিটি-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক।
এলিভিটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পাশাপাশি আরো দুটি প্রকল্প উদ্বোধন হবে। আর পতেঙ্গায় গিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। সুধী সমাবেশের মতো অনুষ্ঠান হবে। এর চেয়ে বেশি কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজনের পরিকল্পনা নেই। ১ হাজার অতিথির তালিকা আমরা করেছি। তাদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় ভেন্যুর আশপাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানবাহন চলাচল সীমিত রাখতে পুলিশ ও র্যাবের দপ্তরে আলাদা চিঠি দিয়েছে সিডিএ।
তবে তিনি জানান, এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হলেও পুরোপুরি খুলছে না। কারণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামোর কাজ ৮৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ সামনের বছরের জুন মাস পর্যন্ত। এর মধ্যে সব কাজ শেষ করে ফেলব। এরপরই পুরোপুরি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তবে মূল অবকাঠামো দিয়ে আপাতত সীমিত আকারে যানবাহন চলবে। চলতি বছরের মাঝামাঝিতেই এক্সপ্রেসওয়ের শতভাগ সুফল পাবেন চট্টগ্রামবাসী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসন করে সহজ করতে ‘চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি’ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ১১ জুলাই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। এ ছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ আরো ২ বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫৪ ফুট প্রশস্ত চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে আছে ২৪টি লুপ র্যাম্প ও এবং ৩৯০টি পিলার। নগরীর যানজট নিরসন ও বিমানবন্দর থেকে মূল শহরের যোগাযোগ সহজ করতে এ প্রকল্প ভূমিকা রাখবে বলে দাবি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের।