চট্টগ্রামবন্দরে ভিড়েছে রাশিয়ার তিনটি যুদ্ধজাহাজ। রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌ বহরের জাহাজ এগুলো। এর মধ্যে দুটি জাহাজ হলো, বৃহৎ অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ অ্যাডমিরাল ট্রিবুটস এবং অ্যাডমিরাল প্যান্টেলিয়েভ। অপর জাহাজটি হলো মহাসাগরীয় ট্যাঙ্কার পেচেঙ্গা। তিনটি রুশ জাহাজ ভিড়েছে স্বাধীনতার অন্তত ৫০ বছর পর। এই নিয়ে নানা কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, এসব জাহাজ পূর্ব নির্ধারিত সফরসূচি অনুযায়ী ভিড়েছে। নির্ধারিত সময় পর চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করবে। বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের বন্দরে সর্বশেষ রুশ কোনো যুদ্ধজাহাজ এসেছিল ৫০ বছর আগে। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে মাইন অপসারণের জন্য রুশ যুদ্ধজাহাজের সাহায্য নিয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্তিতস্কি বলেন, আসলে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনকারী তরুণ দেশটিকে একটি মানবিক বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে রুশ যুদ্ধজাহাজ শেষবার এখানে এসেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বন্দরের জলে অনেক মাইন রাখা হয়েছিল, এতে কয়েক ডজন জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই সমস্যা সমাধানে বহু দেশের কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিল। কিন্তু তাদের কেউ কেউ এ কাজে রাজি হলেও বড় অংকের অর্থ দাবি করেছিল, যা সে সময় বাংলাদেশের কাছে ছিল না। শুধু সোভিয়েত ইউনিয়নই মানবিক কারণে সহায়তা দিতে রাজি হয়েছিল।
মাইন অপসারণ অভিযান ১৯৭২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৭৪ সালের জুন পর্যন্ত চলে। সোভিয়েত নৌবাহিনীর ৮০০ জন নাবিক ২৬ মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করে চট্টগ্রাম বন্দরকে নিরাপদ করে। মাইন অপসারণ অভিযানে একজন রাশিয়ান নৌ ডুবুরি মারা যান। চট্টগ্রামে রাশিয়ার অনারারি কনসাল আশিক ইমরান বলেন, এখন রাশিয়ান নৌ নাবিকরা আবার বন্দরে এসেছেন। এবার এটা কেবল বন্ধুত্বপূর্ণ সফর। তিনি বলেন, এটি প্রমাণ করে যে, দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে খুব উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।