ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘ফেইসবুকে সরব, মাঠে নেই বিএনপি’

অগ্নিসন্ত্রাস ঠেকাতে কক্সবাজারে কঠোর অবস্থানে পুলিশ

অগ্নিসন্ত্রাস ঠেকাতে কক্সবাজারে কঠোর অবস্থানে পুলিশ

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকে চতুর্থ দফার সর্বাত্মক অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও গতকাল দেখা মিলেনি বিএনপির নেতাকর্মীদের। ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। চতুর্থ দফা অবরোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সরব থাকলেও মাঠে ছিলনা কক্সবাজারের বিএনপির নেতাকর্মীরা। এমনকি মুঠোফোনে পাওয়া যাচ্ছে না দলের অনেক শীর্ষ নেতাদের। তবে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাদী হয়ে ‘নাশকতা’ মামলা করেন, যার কারণে দলীয় কর্মীরা গ্রেপ্তার এড়াতে কৌশলে কাজ করছেন। এদিকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা না গেলেও অবরোধে অগ্নিসন্ত্রাস, পেট্রল বোমা নিক্ষেপ ঠেকাতে কক্সবাজারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল সোমবার ভোরে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে এবং বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।

দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও মহাসড়ক, উপসড়কে ছোট যানবাহন চলাচল অব্যাহত ছিল। কক্সবাজার শহর থেকে উপজেলাগুলোয় সব ধরনের যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলছে। গতকাল ভোরে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী কিছু লোকাল বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। তবে কয়েকজন পরিবহণ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।

এদিকে অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে ‘বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স (অপারেশনস) শাখা থেকে নানা নির্দেশনা দিয়ে একটি চিঠিও দিয়েছে এরই মধ্যে। ওই চিঠির কপিটি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষণ রয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি সড়কে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির টহল ও অবস্থান দেখা মিলেছে। টহল দিতে দেখা গেছে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এছাড়া কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘পেট্রল বোমা’ নামে নাশকতা, অগ্নিসংযোগ রোধে চলাচলরত মোটরসাইকেলসহ অন্য যানবাহনে সন্দেহজনক লোকজনকে তল্লাসি করছে পুলিশ।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী জানিয়েছেন, কক্সবাজারের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। কিছু লোকালবাসসহ বিছিন্নভাবে মানুষ চলাচল করছে। তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে রাতে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাসগুলো যাতে নিরাপদে পৌঁছতে পারে, সেজন্য জেলা পুলিশের বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

কুমিল্লা রিজিয়ন চট্টগ্রাম জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. নাসিম খান বলেন, হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের এসপির নির্দেশে কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলরত ছোট বড় যানবাহন গুলো চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের পেট্রল টিম সতর্ক অবস্থান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, নিরাপদে যাতে যানবাহন চলাচল করতে পারে সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের দায়িত্বশীলদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মহাসড়কের চকরিয়া অংশে দায়িত্বরত চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। পুলিশের পৃথক টিম মাঠে দায়িত্ব পালন করছে।

তার দাবি মতে, বিশেষ করে হরতাল বা অবরোধের সময় ছদ্মবেশ এ মোটরসাইকেলযোগে চলাচল কালে কিছু দুষ্কৃতকারী হঠাৎ যানবাহনে ‘পেট্রল বোমা’ নিক্ষেপ করে দ্রুত ছিটকে পড়ে। যার কারণে সন্দেহভাজন লোকজনকে তল্লাশি করা হচ্ছে। এই তল্লাশিতে যাতে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলে এই কর্মকর্তা দাবি করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত