যমুনার চরাঞ্চলে লাখ টাকার পাতামুলা বিক্রি

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চলতি বছর শুকনো মৌসুমে যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। ফলে নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা রোপণ করে ছিলেন মুলাসহ নানা ধরনের রবি ফসল। আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় এ বছর ব্যাপকহারে দুর্গম যমুনা নদীর চরাঞ্চলে পাতা মুলার চাষ হয়েছে। আর মুলা এই বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন খেটে খাওয়া চরাঞ্চলের শত শত কৃষক। অন্যদিকে, উপজেলার যমুনা নদী চরাঞ্চলের কৃষকরা উৎপাদিত মুলা উপজেলার গোবিন্দাসী, পাথাইলকান্দি, কুঠিবয়ড়া বাজার, নলিন বাজারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাইকারি দরে বিক্রি করছেন। এতে করে প্রতিদিন লাখ টাকার উপরে মুলা বিক্রি করে থাকেন তারা। পাইকারি দরে মুলা কিনতে উপজেলার বিভিন্ন সবজি পাইকরি ক্রেতারা উপচেপড়া ভিড় করেন অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা মুলার হাট। গাবসারা ইউনিয়নের বাসুদেবকোল গ্রামের কৃষক রহিজ উদ্দিন, ‘হানান আলী ও কদ্দুস মন্ডলসহ অনেকে বলেন, গতবারের চেয়ে নদীতে এবার অনেক চর জেগেছে। মাসখানেক আগে আমার জমি জেগে ওঠে। সেখানে মুলার বীজ রোপণ করেছিলাম। কোনো ধরনের কীটনাশক ছাড়াই মুলা চাষ ভালো হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় হাটে নিয়েও বিক্রি করতে হচ্ছে না। সবজি পাইকাররা বাড়িতে এসে মুলা কিনে নিচ্ছেন। শুশুয়া গ্রামের মুলা চাষি কৃষক রতন আলী বলেন, প্রতিদিন চর থেকে মুলা উঠিয়ে ভোরে নলিন বাজারে ৫০০ আঁটি মুলা এনেছিলাম। ভূঞাপুর কাঁচাবাজারের এক সবজি বিক্রেতা ১ হাজার ২০০ টাকা দরে কিনে নিয়েছেন। ৬ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আমি একা নই, আমার মতো অসংখ্য কৃষকরা ননিল বাজারে সকালে পাইকারি দরে মুলা বিক্রি করে থাকেন। প্রথম অবস্থায় ভালো দামে বিক্রি করতে পারছি। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক জেলা মহাসড়কের উপজেলার অর্জুনা ও গাবসারা চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের চাষ করা মুলা নৌকাযোগে প্রতিদিন ভোর থেকে নলিন বাজারে ও কুঠিবয়ড়া বাজারে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে আশপাশেরর বিভিন্ন পাইকাররা তাদের থেকে ন্যায্যমূলে মুলা কিনে নেন। অপেক্ষাহীন দ্রুত সময়ে মুলা বিক্রি ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরাও বেশ খুশি। জগৎপুরা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন সরকার বলেন, যমুনার নলিন নৌকা ঘাটের বাজারটি ঐতিবাহী একটি হাট। প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে এই দিনে চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন শাকসবজি পাইকারি বিক্রি করে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত লাখ টাকার বেশি মুলা কেনাবেচা হয়। অনেক দূর-দূরান্তের সবজি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মুলাসহ বিভিন্ন সবজি কিনেন। ননিল বাজারে দ্রুত সময়ে সবজির আড়ত গড়ে উঠবে। উপজেলা কৃষি অফিসার আরিফুর রহমান বলেন, যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠপর্যায়ে চরাঞ্চলের কৃষকদের নিয়ে সবজি চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়। সে কারণে এবার মুলার ফলন হয়েছে বেশি। অল্প সময়ে কম পুঁজিতে বেশি লাভ হয় বলে চাষিরা মুলা চাষে ঝুঁকছেন। কৃষকরা এবার বেশ ভালো দামও পেয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য শাকসবজি চাষাবাদের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।