বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ

সংরক্ষিত নারী আসনে প্রত্যক্ষ ভোটের সুপারিশ

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে টেকসই ও অগ্রগামী করতে অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে ভোট চালুসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নবিষয়ক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মহিলা পরিষদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি। তিনি বলেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশকে জটিল ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা পূর্ববর্তী সময়ের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে উন্মোচন করছে। এই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে থাকার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে টেকসই ও অগ্রগামী করতে অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সংগঠনের সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। মোট আসন সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ বাড়াতে হবে এবং এই ব্যবস্থা আগামী দুই বা তিন টার্ম বলবৎ রাখাতে হবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অধিকহারে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে অর্থ যাতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে কোনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া মহিলা পরিষদ সব রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি মনিটরিং করাসহ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন; নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন; নারী নির্যাতন প্রতিরোধ; সাম্প্রদায়িকতা ও নারী বিদ্বেষী মনোভাব প্রতিরোধ; আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, দলিতসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার সংরক্ষণ; নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া অধিকার এবং গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিতে সংগঠনের পক্ষে সুপারিশ করে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আজকের সংবাদ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে নারীকে অবমাননা করার দিকটির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের নারী-পুরুষের সমতা ও ন্যায্যতার কথা বলা হলেও রাজনৈতিক ইশতেহারে নারী ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্ব পায় না। এতে নারী সমাজের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সংরক্ষিত আসনে সংখ্যা বৃদ্ধি, সরাসরি নির্বাচন এবং নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট এলাকা নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি নারী নীতিতে তেমন গুরুত্ব পায়নি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি একক মন্ত্রণালয় হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ও নারীর অধিকার সুরক্ষায় এই মন্ত্রণালয়ের জোরালো ভূমিকা পালন করবে- এটি মহিলা পরিষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও দাবি।