ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কুষ্টিয়ায় হানিফ

বিএনপিকে অপরাধের দায় স্বীকার করতে হবে

বিএনপিকে অপরাধের দায় স্বীকার করতে হবে

কুষ্টিয়া-৩ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, ২৮ অক্টোবর পুলিশ হত্যা, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ ও সাংবাদিক আহত করার মতো অপরাধের দায় স্বীকার করে বিএনপি শর্তহীন আলোচনায় বসতে চাইলে সংলাপে বসার কথা বিবেচনা করা যায় কি না, আওয়ামী লীগ ভেবে দেখবে।

তিনি আরো বলেন, আগে অপরাধ স্বীকার করতে হবে, দায় স্বীকার করতে হবে। আপনি মানুষ মারবেন, গাড়িতে আগুন দিবেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবেন আর অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বসে থাকবেন? এখন বিদেশি প্রভু বলল আলোচনায় বসতে আর সরকার আলোচনায় বসে যাবে, এতটা সহজ সমীকরণ নয়? গতকাল দুপুরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হানিফ বলেন, মার্কিন সহকারী উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু তিনটি দলের কাছে চিঠি দিয়েছেন। দলের (আওয়ামী লীগের) কাছে চিঠি নিয়ে আমার কাছে এখনো কোনো তথ্য নেই। যারা চিঠি পেয়েছে সেটা তারা বলেছে। আমি যতটুকু শুনেছি, সেই চিঠিতে তারা লিখেছে আগামী জাতীয় নির্বাচন সবাই অবাধ, সুষ্ঠু দেখতে চায় এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন একটা আলোচনা, সংলাপ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা তো এই কথা আগেও বলেছিলাম। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক বহু আগে বলেছেন যে, যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে শর্তহীন আলোচনায় বসতে আমাদের দুয়ার খোলা আছে। তখন তো ওই বিদেশি শক্তি নিয়ে বিএনপি এমন ভাবল যে তারা বলল, কীসের শর্তহীন, আগে পদত্যাগ করেন তারপরে আলাপ-আলোচনায় বসেন। ২৮ অক্টোবর একটা ধাক্কা খাওয়ার পরে প্রভুর মাধ্যমে বলছেন সরকার পতন লাগবে না, আমরা এমনিতেই বসতে চাচ্ছি, একটু দয়া করে বসেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুব পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যারা গাড়িতে আগুন দেয়, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়; এটা সন্ত্রাসী কর্মসূচি।

হানিফ বলেন, আলোচনা রাজনৈতিক দলের সাথে হতে পারে। আলোচনা কোনো সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে হতে পারে না। নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে- জানিয়ে হানিফ বলেন, এই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে রাজনীতির মাঠ সরগরম করার চেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চক্রান্তও আছে। অনেক দেশের তৎপরতা দেখা যায় যারা নির্বাচন নিয়ে নানান কথা বলছে।

তিনি বলেন, আমরা চাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে হোক। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে আমাদের সরকার বদ্ধ পরিকর। প্রধানমন্ত্রী এ কথা অনেকবার বলেছেন। আমরা বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে। হানিফ বলেন, বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়ন অগ্রগতিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকলে মেডিকেল কলেজ হবে, আমরা আরো উন্নয়ন করতে পারবো, এটা আজকে প্রমাণিত। কুষ্টিয়া থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে আজ আমরা ৩ ঘণ্টায় ঢাকা চলে যেতে পারি। রেল সংযোগ ব্যবস্থা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। চট্টগ্রামে নদীর নিচ দিয়ে টানেল হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার কারণে।

হানিফ বলেন, আমাদের বহু কাঙ্ক্ষিত ছিল এই মেডিকেল কলেজ। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী অঞ্চলের মানুষের কঠিন কোনো রোগ হলে খুবই কষ্ট ছিল। আমাদের এই আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা করার সুযোগ হবে। এরপর আর কোনো রোগের জন্য আমার বিশ্বাস এই অঞ্চলের মানুষকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী বা ঢাকাতে যেতে হবে না। আমার ইচ্ছা আছে এই মেডিকেল কলেজকে আরো বর্ধিত করা। আরো বিশেষায়িত ইউনিট করব, যার মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষ সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পেতে পারে। আলোচনা সভায় কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ কা ম সারোয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মারুফ হাসান, জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মাহবুবুর রহমান খান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত