কক্সবাজারের রম্যভূমি রামুতে চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার ১১ ইউনিয়নে আমন ধানের সোনালি শীষে ভরে গেছে কৃষকের খেত। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি আমন ধানের শীষ। এই মৌসুমে উপজেলায় ৯ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। সেই হিসাবে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধানের ফলন আশা করছেন রামু উপজেলা কৃষি বিভাগ।
রামু উপজেলা কৃষি অফিসার তানজিলা রহমান জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমরা আশা করি, আশানুরূপ ফলন পাবে কৃষকরা। গতবছরের চেয়ে এই বছরে আমরা আরো বেশি ফলন আশা করছি, কৃষকদের এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মিধিলির বৃষ্টিতে প্রায় ৫৫ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে তাতে ফলন খুব বেশি কমবে না। আশা করছি, আমরা যা ধারণা করছি তার চেয়ে বেশি ফসল পাবো। আর আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক।
রামুর বিভিন্ন আমন ধানের ফসলি মাঠ সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, মাঠের যেদিকেই চোখ মেলে দেখা যায়, আমন ধানের সবুজের মাঝে সোনালি ঢেউ। যা দেখে আমন ধানচাষিদের প্রাণেও আনন্দের ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই প্রতীক্ষা, প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা নিশ্চিত। ৭০ ভাগ ধানগাছ সোনালি শীষ নিয়ে মাটির জমিনে দাঁড়িয়ে আছে। এ ধান কয়েকদিন পরেই কৃষকের বাড়িতে গেলে, ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। রাত জেগে গৃহিণীরা ধান সিদ্ধ করে সকাল থেকে মাঠে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করবেন।
উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের কৃষক এহসান উল্লাহর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা একটু আগাম আমন ধান চাষ করেছেন তাদের ধানে পাক ধরেছে। বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে কদিন পরেই শুরু হবে পুরোদমে ধানকাটা।
চাকমারকুল ইউনিয়নের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এবছর আমি সাড়ে ৩ একর জমিতে ধান রোপণ করেছি আমার ধান ভালো হয়েছে। ফসলের খেতে রোগ কিংবা পোকার কোনো আক্রমণ ছিল না। উৎপাদন ভালো হয়েছে। দাম ভালো পেলে লাভবান হতে পারব।
এদিকে কৃষি উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় খরচ বেশি হয়েছে। তাই লাভের চেয়ে খরচের পরিমাণ একটু বেশি এবং সস্তায় চাষাবাদ সম্পন্ন করা গেলে লাভবান হওয়া যেত। সব মিলিয়ে একটি সুন্দর পরিবেশ থাকায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এতে করে কম বেশি সব পর্যায়ের কৃষকের খুবই খুশি বলে অভিমত সাধারণ কৃষকদের।