ঢাকা ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আইনি নিষেধাজ্ঞায় মেঘনায় অবমুক্ত

জেলেদের জালে ধরা পড়ল ২০০ বছর বয়সি ৭১ কেজি ওজনের কাছিম

জেলেদের জালে ধরা পড়ল ২০০ বছর বয়সি ৭১ কেজি ওজনের কাছিম

আশ্চার্যজনক হলেও সত্য চাঁদপুর নৌ-সীমানার মেঘনা নদীর চরভৈরবীতে জেলেদের জালে ধরা পড়া একটি কাছিমের বয়স নির্ধারণ করা হলো প্রায় ২০০ বছর। এ বয়সের হিসাব কষে দিলেন খোদ চাঁদপুরের বন বিভাগ কর্মকর্তারা। এ কচ্ছপের ওজন মেপে দেখা গেল ৭১ কেজি, যার বাজার ধর উঠে ৭৫ হাজার টাকা। তবে শখের বসে কিনে নিয়ে কাছিমটি আর খাওয়ার ভাগ্যে হলো না ক্রেতাদের।

সনাতন ধর্মীয় (হিন্দু সম্প্রদায়ের) লোকজন এ কাছিম জবাই করে মাংস খেয়ে স্বাদ গ্রহণ করার জন্য যখন প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময় চাঁদপুর সদর মডেল থানার একদল পুলিশ সদস্য সেখানে হানা দেয়। কাছিমটি তারা থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এটিকে বন বিভাগের সহযোগিতায় মেঘনা নদীতে অবমুক্ত করা হয়। গত শনিবার রাতে কাছিমটিকে চাঁদপুর শহরের মোলহেডে তিন নদীর মোহনায় মেঘনা নদীতে অবমুক্ত করেন সদর মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় সদর উপজেলা বনবিভাগ।

গত কয়েক দিন আগে জেলার হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী এলাকার জেলেদের জালে মেঘনা নদীতে ধরা পড়ে কাছিমটি। গত শনিবার সকালে মো. জসিম উদ্দিন নামে জনৈক ব্যবসায়ী এটি ক্রয় করে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন সদরের বালিয়া ইউনিয়নে। জসিমের কাছ থেকে এই ইউনিয়নের বালিয়া বাজার এলাকার সনাতন ধর্মের ত্রিপুরা জাতির লোকজনসহ অনেকে মিলে ৭৫ হাজার টাকায় কাছিমটি ক্রয় করেন।

কাছিমটি ত্রিপুরা জাতির লোকজনসহ অন্যেরা ক্রয় করে তাদের বাড়ির বাগানে রাখলে এলাকার শত শত মানুষ উৎসাহিত হয়ে ২০০ বছর বয়সি কাছিম দেখতে ভিড় জমায়। একপর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জানাজানি হলে শেষ বিকালে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং পরবর্তীতে সদর বন বিভাগের কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন সেখানে গিয়ে হাজির হন। ত্রিপুরা জাতির কর্তা ব্যক্তি (নেতা) খোকন ত্রিপুরা জানান, মূলত তারা এটি খাওয়ার জন্য ক্রয় করেন।

তিনি বলেন, এটি জবাই করে গোশত খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম। পরে প্রশাসনের লোকজন আসার পরে তাদের কাছিমটি দিয়ে দিয়েছি। আমাদের বাড়ির বয়স্ক লোকদের ধারণা এটির বয়স প্রায় ২০০ বছরের বেশি হবে। আমাদের জাতির লোকজন এ ধরনের কাছিম পূর্বে থেকে খেয়ে আসছেন বলে তিনি জানান। তবে এ ধরনের কাছিম এখন সচরাচর খুব কম পাওয়া যায় না। তবে পূর্বে অনেক পাওয়া যেত। এ ধরনের কাছিমের গোশত অনেক সুস্বাদু বলে খোকন ত্রিপুরা জানালেন। চাঁদপুর সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান জানান, কাছিম ধরা পড়ার খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ আমাকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে বন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে এটি উদ্ধার করে নিয়ে আসি এবং অবমুক্ত করার ব্যবস্থা করি। চাঁদপুর সদর বন বিভাগের কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন জানান, নদী থেকে কাছিম ধরে বিক্রি ও মাংস খাওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। এই ধরনের কাছিম এখন খুব একটা দেখা যায় না। বিশাল আকৃতির কাছিমটি জবাই করার প্রস্তুতিকালে খবর শুনে সেটি পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়।

পরবর্তীতে শহরের বড় স্টেশন তিন নদীর মোহনা মেঘনায় ছেড়ে দিয়ে কাছিমটি অবমুক্ত করা হলো।

তিনি আরো জানান, উপস্থিত সবাইকে বলা হয়েছে, যারা নদী থেকে কাছিম ধরবে ও বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ধরনের কাছিম ধরার কোনো খবর পাওয়া গেলে পুলিশ এবং আমাদের জানাবেন। যারা জানাবেন তাদেরকে পুরস্কার দেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত