ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক আর নেই। গতকাল সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) শাহাজাদী সুলতানা ডলি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের সবারপ্রিয় জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) এ মালিক বার্ধক্যজনিত কারণে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
আব্দুল মালিক ২০০৪ সালে স্বাধীনতা পদক পুরস্কার ও ২০০৬ সালে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নির্বাচিত হন। জানা গেছে, হৃদরোগ চিকিৎসার এই পথিকৃৎ ১৯২৯ সালের ১ ডিসেম্বর সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৯ সালেই ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৫৪ সালে নভেম্বর মাসে উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৮ সালে তাকে সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) পেশোয়ারে কর্নেল আজমিরের কাছে মেডিকেল স্পেশালিস্টের যোগ্যতা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এতে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হন।
১৯৬৩ সালে সরকার তাকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠায়। এরপর ১৯৬৪ সালে তিনি এমআরসিপি পাস করেন এবং হ্যামার স্মিথ হসপিটাল অ্যান্ড পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিকেল স্কুল, লন্ডন থেকে কার্ডিওলজিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। আব্দুল মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নেসা খাতুন। তিনি ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার মেয়ে ডাক্তার ফজিলাতুন্নেছা মালিক ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট, ঢাকার কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক। তার ছেলে মাসুদ মালিক একজন ব্যবসায়ী ও আরেক ছেলে মনজুর মালিক বর্তমানে কানাডায় কর্মরত।
প্রধানমন্ত্রীর শোক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অধ্যাপক ডা. আব্দুল মালিকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালিক বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসার অন্যতম পথিকৃৎ। মরহুম মালিক একাধারে একজন সফল চিকিৎসক, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক।
মানব হিতৈষী কাজের জন্য তিনি নানাভাবে পুরস্কৃত এবং প্রশংসিত হয়েছেন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে হৃদরোগ চিকিৎসার ক্ষেত্রে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ প্রধানমন্ত্রী ডা. আব্দুল মালিকের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।