ঢাকা ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন

প্রার্থিতা ফিরে পেতে আজ শেষ হচ্ছে আপিল

* আপিলকারীরা শতভাগ ন্যায়বিচার পাবেন : ইসি * প্রার্থিতা ফিরে পেতে ইসিতে ৪৩১ জনের আবেদন
প্রার্থিতা ফিরে পেতে আজ শেষ হচ্ছে আপিল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার শেষ সময় আজ শনিবার। এরপর নির্বাচন কমিশনাররা বসে আপিলকারী প্রার্থীদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি সূত্র জানায়, গতকাল পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে পেতে ইসিতে আবেদন করেন ৪৩১ জন। প্রথম দিনে আপিল আবেদন ছিল ৪২ জনের। দ্বিতীয় দিন করেছিলেন ১৪১ জন, তৃতীয় দিনে ১৫৫ ও গতকাল চতুর্থ দিনে ৯৩ জন আপিল করেছেন। এবারের জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল ২ হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছেন ৭৩১ জনের।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে যারা আপিল করেছেন, তারা শতভাগ ন্যায়বিচার পাবেন।

ছোটোখাটো ভুলত্রুটি সমাধান করে প্রার্থিতা ফেরত পাওয়ার আবেদন করলে কমিশন বিবেচনা করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- সেটা কমিশন বিবেচনা করবে, অ্যাডভান্স তো বলতে পারি না। কমিশন অবশ্যই ন্যায়বিচার করে তাদের আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। মনোনয়ন বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কিছু আপিল হয়েছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে যদি প্রমাণ পান, বাতিল করবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই। আইনে আছে, দেখুন এবার আরপিও সংশোধন হয়েছে। আগে ছিল রিটার্নিং অফিসারের রিজেকশনের বিরুদ্ধে আপিল। আরপিওতে আছে, শুধু রিটার্নিং অফিসারের রিজেকশন না, রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। অ্যাকসেপ্টেন্সের বিরুদ্ধেও আপিল হবে, রিজেকশনের বিরুদ্ধে আপিল হবে। যেহেতু আইনে আছে, কমিশন যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে। যারা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, সময়মতো হাজির হয়ে যদি তারা মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তারা তো হাইকোর্টে গিয়েছিলেন, হাইকোর্ট যদি নির্দেশনা দেন, তাহলে রিটার্নিং অফিসার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করবেন। হাইকোর্ট থেকে যদি তারা প্রতিকার না পান, সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় নেই।

এদিকে আপিল করতে এসে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেছেন, শূন্য নেতৃত্ব দিয়ে আর কতদিন চলবে বিএনপি? ফাঁকা বুলিতে আর কতদিন চলবে? মহাসচিবকে হাইকোর্ট থেকে জামিন দেয় না, আর আঙুল চোষে তারা।

আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেন, আমি বিএনপির বর্তমান কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ করেছি। আমি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেছি। উনি যেভাবে দলকে চালাচ্ছেন, সেভাবে দলের সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার, লাখ লাখ নেতাকর্মী আজ গৃহহারা, তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো ভদ্রলোককে উচ্চ আদালত জামিন দেয়নি। এর চেয়ে নির্মমতা আর কী হতে পারে। কেন আমরা এমন একটা কাজ করলাম, যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করবে। কেন আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই কর্মীদের উপর? কী রাজনীতি করি আমরা? আজকে আমার মহাসচিব হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন না। কেন হাইকোর্টের জামিন না দেওয়ার বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার দিন আলাদা হরতাল দেওয়া হলো না? কিসের দল করেন আপনারা?

মনোনয়নপত্র বাতিল প্রসঙ্গে আখতারুজ্জামান বলেন, ইসি থেকে আমাকে জানানো হয়েছে, আমি মামলা সম্পর্কে লিখিনি। এটা যদি লিখতে হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বড় বড় রাঘববোয়াল সব নেতারা বাদ পড়বে। এত হাজার হাজার কেস জীবনে খেয়েছি এবং আরো খাচ্ছি। কোথাও লেখার জায়গা নেই। লেখা আছে অতীত সব মামলা। অনেক মামলায় তো নেতারা খালাস পেয়েছেন। আমরা যেসব মামলায় খালাস পেয়েছি, সেসব কেন লিখতে হবে? উনারা লিখবে না, তাহলে আমরা লিখব কেন? এটা তারা মনে হয় সঠিক করেনি।

প্রার্থিতা ফেরত পাবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রার্থিতা ফেরত পাব না কেন? পাব বলেই তো আপিল করেছি। অবশ্যই প্রত্যাশা করি পাব।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে দেড় বছর ধরে বহিষ্কার করে রেখেছে বিএনপি। তাহলে আমি বিএনপির সিলটা কেন ব্যবহার করতে যাব? ব্যবহার করা অন্যায় ছিল। আমাকে ন্যূনতম সদস্যাও রাখা হয়নি। আমি স্বতন্ত্র হয়েছি, বিরোধিতায় তো যাইনি। এটা আবার কি অপরাধ হলো?

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত