দানবাক্সগুলো যেন টাকার খনি

মিলল ৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা

প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শাহজাহান সাজু (কিশোরগঞ্জ)

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দান বাক্সে এবার তিন মাস ২০ দিনে পাওয়া গেছে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪ শত ২৩ টাকা। এছাড়া রয়েছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রা। গত শনিবার থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে টাকা গণনার কাজ।

আগে এসব অর্থ জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার উন্নয়নসহ গরিব মেধাবী ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হলেও এবার পাগলা মসজিদকে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স বানানোর কাজে এসব টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মসজিদের ৯টি লোহার দানসিন্ধুক যেন টাকার খনি। খুলতেই দেখা যায় শুধু টাকা আর টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে নেয়া হয় ওই মসজিদেরই দোতলায়। পরে, মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গুনেন প্রায় ১৫০ মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষকসহ ৬০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। তিন মাস পরপরই এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে।

এবার তিন মাস ২০ দিন পর গত শনিবার সকালে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে বের করা হয় ২৩ বস্তা টাকা। এছাড়াও পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা, রূপা ও স্বর্ণালংকার।

এর আগে, চলতি বছরের আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে এসব দানবাক্স খুলে তিন মাস ১৩ দিনে মিলেছিল ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণ ও রূপার অলংকার। এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগ-বালাই দূর হওয়াসহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সব ধর্মের মানুষ প্রতিনিয়ত মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা, গরু, ছাগল, হাস, মুরগীসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন।

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, দানবাক্সের নগদ টাকা ছাড়াও প্রতিদিন প্রাপ্ত গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রতিদিনই বিক্রি করে টাকা রূপালী ব্যাংকে রাখা হয়।

এরই মধ্যে দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ পাগলা মসজিদের আয় দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মসজিদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ। জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় ২৫০ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।