র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিরা আর যেন বিপদগামী পথে না যায়। সেজন্য তাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বনির্ভর হতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর্থিক অনুুদান হিসেবে ৩১৪ জন আত্মসমর্পণকারী সদস্যর প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার চেক প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশনায় গতকাল দুপুরের দিকে র্যাব-১২ সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, এক সময় দেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ৭টি জেলায় চরমপন্থি সর্বহারা দলের সদস্যরা খুন, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করেছিল। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য র্যাবের কঠোর অভিযানে সেই সন্ত্রাসী রাজত্বের অবসান ঘটে এবং অধিকাংশ চরমপন্থি সর্বহারা সদস্য আত্মগোপন করে। এরমধ্যে অনেকে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে। তাদের এ আগ্রহে র্যাব-১২ তাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। র্যাব-১২ এর এ উদ্যোগে চরমপন্থি সর্বহারাদের আত্মসমর্পণের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ২১ মে ওইসব অঞ্চলের সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও রাজবাড়ী জেলার ৩১৪ জন চরমপন্থি ও সর্বহারা সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে ২ শতাধিক অস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদ তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণকারী পরিবারকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করার জন্য র্যাব-১২ ‘উদয়ের পথে’ নামক পাইলট প্রোগ্রামের মাধ্যমে হস্তশিল্প প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনা করে তার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ৩১৪ জনের প্রত্যেকের জন্য ১ লাখ টাকা করে অনুদান দেন। আত্মসমর্পণকারীরা যাতে সহজেই ক্ষুদ্র ঋণের আওতায় আসতে পারে সেইজন্য র্যাব-১২ তার আওতাধীন সব জেলার প্রায় ৩৮টি এনজিওর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য তাদের নামে থাকা অন্য মামলাগুলোর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। র্যাব-১২ এর অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মারুফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান, আত্মসমর্পণকারী শামিম শেখ প্রমুখ। প্রধান অতিথি আত্মসমর্পণকারীদের মাঝে এ চেক বিতরণ করেন। এ অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান, জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম তাজ ফুল, পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
