পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরো অনেকে। গতকাল উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের একটি পুলিশ স্টেশনে এই হামলা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার এই পুলিশ স্টেশনটি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করত।
গতকাল পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। অবশ্য আলজাজিরার প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জন বলে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র লোকেরা উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ২০ জনকে হত্যা করেছে বলে একটি সামরিক সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী উপজাতীয় অঞ্চলে অবস্থিত খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খান শহরের দারাবনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আল জাজিরা বলেছে, হামলায় অন্তত ২৮ জন আহত হয়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় উদ্ধারকারী সংস্থার কর্মকর্তা আইজাজ মেহমুদ জানিয়েছেন।
অন্যদিকে দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পুলিশ স্টেশনে হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। মূলত এই পুলিশ স্টেশনকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বেস ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মৃতদের অনেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় এবং বেসামরিক পোশাকে থাকা অবস্থায় নিহত হয়েছেন। তাই আমরা এখনো খতিয়ে দেখছি যে, তারা সবাই সেনা সদস্য কিনা।’ কর্মকর্তাদের মতে, বন্দুক হামলার পর যোদ্ধারা বিস্ফোরকবোঝাই একটি গাড়িকে থানার প্রধান গেটে ঢুকিয়ে দেয়। রয়টার্স বলেছে, তেহরিক-ই-জিহাদ পাকিস্তান (টিজেপি) নামে একটি পাকিস্তানিগোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। টিজেপি বলেছে, তাদের যোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়েছে। প্রসঙ্গত, টিজেপি নামের এই গোষ্ঠীটি সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। আলজাজিরা বলছে, টিজেপি দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির প্রধান সশস্ত্র নিষিদ্ধগোষ্ঠী টিটিপি’র সাথে যুক্ত বলে দাবি করেছে। মূলত টিটিপি বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা করে চলেছে।
এছাড়া ডেরা ইসমাইল খান শহরটি টিটিপির সাবেক শক্ত একটি ঘাঁটি। নিষিদ্ধঘোষিত এই গোষ্ঠীটি পাকিস্তানে সরকারকে উৎখাত করতে এবং কঠোর ধর্মীয় আইন চালু করতে চায়। সাম্প্রতিক সময়ে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বেশ কয়েকটি মারাত্মক হামলা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারে একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০১ জন নিহত হয়েছিলেন।