হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আজ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে পারে
দেশে সরবরাহ বাড়ায় কমবে দাম
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) থেকে
আজ থেকেই দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আগের টেন্ডার করা পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি দামও কমতে পারে। সেই সঙ্গে পুরোনো সব এলসির পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদনসহ পেঁয়াজ রপ্তানিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ভারত প্রত্যাহার করে নিতে পারে বলেও জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা ভারত সরকার নির্ধারিত বাড়তি মূল্যেই পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছিলাম। এর মধ্যেই নতুন করে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকটের অজুহাত দেখিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর হঠাৎ ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে ৭ তারিখের আগে হওয়া আমাদের অনেকের পেঁয়াজের এলসি দেওয়া থাকলেও সেই পেঁয়াজ আটকা পড়ে। তিনি বলেন, এমনকি আগের টেন্ডার করা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। যার কারণে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ে যাই। আমরা এর পর থেকেই আগের টেন্ডার করা পেঁয়াজ রপ্তানির অনুরোধ জানিয়ে আসছিলাম ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। সেই সঙ্গে পুরোনো এলসিগুলোর পেঁয়াজ রপ্তানির দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এরমধ্যেই আগের টেন্ডার করা পেঁয়াজগুলো রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তিনি আরো বলেন, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের বিপরীতে সেই অনুমোদন হয়ে গেছে। কিন্তু হিলি স্থলবন্দরের ক্ষেত্রে সেই অনুমোদন এখনও হয়নি। আজ সেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে, যার ফলে আজ সোমবারই আগের পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করবে। রপ্তানি বন্ধ থাকায় ভারতে পেঁয়াজের দাম ১২-২৫ রুপিতে নেমে এসেছে। দাম কমে যাওয়ায় ভারতীয় কৃষকরা রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছেন। যার কারণে আমরা আশা করছি পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। এই ব্যবসায়ী আরো জানান, হিলি স্থলবন্দরের কয়েকজন আমদানিকারকের হাজার টনের ওপরে পেঁয়াজের পুরানো এলসি দেওয়া রয়েছে। সবমিলিয়ে বন্দরের সব আমদানিকারকের ৩০ ট্রাকের মতো পেঁয়াজ আটকা রয়েছে। যার মধ্যে আমার নিজের তিন ট্রাক পেঁয়াজ আটকা পড়ে রয়েছে। ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অনিল কুমার বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত সরকার, সেই তারিখ পর্যন্ত যেসব পেঁয়াজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছিল, সেই সব পেঁয়াজ বোঝাই রপ্তানির অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যেই মোহিদিপুর বন্দরের ক্ষেত্রে আগের টেন্ডার করা পেঁয়াজ রপ্তানির বিষয়ে অনুমোদন হয়েছে। তবে হিলি স্থলবন্দরের ক্ষেত্রে এখনও অনুমোদন হয়নি। তবে আজ এ সংক্রান্ত অনুমোদন মিলতে পারে। সে ক্ষেত্রে আজ বা আগামীকাল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগের টেন্ডার করা পেঁয়াজগুলো রপ্তানি শুরু হতে পারে। প্রসঙ্গত, বন্দর দিয়ে আগে প্রতি টন পেঁয়াজ ২০০-৩০০ মার্কিন ডলারে ভারত রপ্তানি করত। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ভারতের বাজারেই পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠলে পেঁয়াজ রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে গত ২৮ অক্টোবর রপ্তানি মূল্য অনেকটা বাড়িয়ে এক লাফে ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। এরপর থেকে সেই মূল্যেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করছিলেন আমদানিকারকরা। নতুন করে আবারও সম্প্রতি ভারতে বন্যা হওয়ায় এবার রপ্তানি চার মাসের জন্য স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত তারা কোনো পেঁয়াজ রপ্তানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ঘোষণা করেছে। গত ৭ ডিসেম্বর ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার ডাইরেক্টর জেনারেল সন্তোষ কুমার স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এর পর থেকে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।