কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র্যাবের সাথে আরসা সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ‘নাশকতা সৃষ্টির জন্য গোপন মিটিং’ করার খবরে অভিযানে গেলে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে আরসার চিহ্নিত চার সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ কিছু বিস্ফোরক।
গত সোমবার দিবাগত রাত ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের জামতলী ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান র্যাব ১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএইচ সাজ্জাদ হোসেন। এতে আটকরা হলেন- উখিয়ার ১০ নম্বর ক্যাম্পের নজিব আহমদের ছেলে আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. ইউনুস প্রকাশ মাস্টার ইউনুস (৩৭), ৪ নম্বর ক্যাম্পের আবদুল মোতালের ছেলে এবং ওই ক্যাম্পের বি ব্লকের জিম্মাদার মফিজুর রহমান প্রকাশ মুজিয়া (৩৮), ১ নম্বর ক্যাম্পের হাসু মিয়ার ছেলে আরসা সদস্য এনায়েত উল্ল্যাহ (২৬), ৪ নম্বর ক্যাম্পের আবদুর রহমানের ছেলে আরসা সদস্য মোহাম্মদ জাবের প্রকাশ আমানুল্লাহ উল্ল্যা (২৭)।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিনসহ দুটি ওয়ান শুটার গান, দুটি দেশীয় তৈরি এলজি, চার রাউন্ড বিদেশি পিস্তলের কার্তুজ, পাঁচটি এলজি’র কার্তুজ, বড় ককটেল পাঁচটি, ছোট ককটেল আটটি, চারটি স্মার্টফোন এবং দুটি পকেট নোটবুক, দুটি হিসাবের খাতা, ৪৪ পৃষ্ঠাযুক্ত হিসাবের লিস্ট খাতা। র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএইচ সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, গত সোমবার মধ্যরাতে উখিয়া উপজেলার জামতলী ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জনৈক ব্যক্তির বাড়িতে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরসা’র সদস্যরা নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে গোপন মিটিং করার খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে র্যাব সদস্যরা সন্দেহজনক বাড়িটি ঘিরে ফেলে। উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছুড়েন। একপর্যায়ে আরসা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে সন্দেহজনক ঘরটি থেকে আরসা’র চার সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার অস্ত্র, গুলিসহ অন্যান্য বিস্ফোরক।
র্যাব অধিনায়ক জানান, র্যাব চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আরসা’র শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সামরিক কমান্ডার, গান গ্রুপ কমান্ডার, অর্থ সম্পাদক, আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র একান্ত সহকারী ও অর্থ সমন্বয়ক মোস্ট ওয়ান্টেড কিলার গ্রুপের প্রধান, ক্যাম্প কমান্ডার, ওলামা বডি ও টর্চার সেলের প্রধান, স্লিপার সেল ও ওলামা বডির অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার, অর্থ সমন্বয়ক, ইন্টেলিজেন্স সেলের কমান্ডারসহ সর্বমোট ৭৬ জন আরসা’র সক্রিয় সদস্যকে আটক করে মামলা দায়ের করে আদালতে সোপর্দ করেছে।
চারজনকে আটকের ঘটনায়ও উখিয়া থানায় মামলা করে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।