জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম ও তার স্ত্রী খালেদা আক্তার বিউটির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বুধবার দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুমিল্লার উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আসামি মো. আবদুস সালাম জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আনন্দসার গ্রামের আবদুল মুমিনের ছেলে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আসামি মো. আবদুস সালাম ২০০৬ সালের ৩০ মার্চ জেলার সদর দক্ষিণ পৌরসভায় নকশাকার পদে যোগদান করেন। ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর সদর দক্ষিণ পৌরসভা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের অধিভুক্ত হলে তিনি সেখানে নকশাকার ও উপসহকারী প্রকৌশলী পদে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এরপর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে সহকারী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) পদে এবং এর পাশাপাশি নগর পরিকল্পনাবিদ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে আবদুস সালাম তার স্ত্রীর নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে তার স্ত্রী খালেদা আক্তার বিউটির নামে স্থাবর অস্থাবরসহ ১ কোটি ৪৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪৯৩ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। আয়কর নথিতে তার পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায় ৯ লাখ ১১ হাজার টাকা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার মোট বৈধ/জ্ঞাত আয় ৫৩ লাখ ৮৩ হাজার ৫২০ টাকা। অর্থাৎ, অনুসন্ধানকালে তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে তার জ্ঞাত আয়ের উৎস ৯৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯৭৩ টাকা কম পাওয়া যায়, যা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ। আবদুস সালাম তার অবৈধ আয় দ্বারা তার স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন করেন এবং ওই আয় দ্বারা সিটি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে জমি ক্রয় ও বাড়িঘর নির্মাণ করেন বলে মামলায় বলা হয়। মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী সাংবাদিকদের জানান, সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম ও তার স্ত্রী খালেদা আক্তার বিউটি পরস্পর যোগসাজশে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৯৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯৭৩ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তদন্তকালে তার জ্ঞাত-আয় বহির্ভূত আরো সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে তা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।