র‌্যাবের মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান

রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেনের সহযোগীসহ দুই কারবারি আটক

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজারে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার গহীন পাহাড়ে র‌্যাবের মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে ‘সীমান্তে চোরাচালান ও মাদকপাচারের রোহিঙ্গা গডফাদারখ্যাত নবী হোসেনের’ অন্যতম এক সহযোগীসহ দুই কারবারি আটক হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএ সাজ্জাদ হোসেন। আটকরা হলো- টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নে ওয়াব্রাং সুইচপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. রফিক আহম্মেদ ওরফে বার্মাইয়া রফিক (৪০) এবং একই ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার নুর আলমের ছেলে ফরিদ আলম (২৮)।

এদের মধ্যে রফিক আহম্মেদ সীমান্তে চোরাচালান ও মাদকপাচারের রোহিঙ্গা গডফাদারখ্যাত নবী হোসেনের অন্যতম সহযোগী। এছাড়া ফরিদ আলম ঘটনায় আটক রফিক আহম্মেদের সহযোগী হিসেবে সীমান্তে মাদকের চালান লেনদেনসহ পরিবহনের কাজ করত।

সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার গহীন পাহাড়ের আস্তানায় মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা মাদকের বড় একটি চালানসহ রফিক আহম্মেদের সিন্ডিকেটের লোকজন অবস্থান করছে এমন খবরে র‌্যাবের একটি দল বিশেষ অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র‌্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহজনক লোকজন পাহাড়ে দিকবিদিক দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। এতে ধাওয়া দিয়ে দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়।

এ সময় সেখানকার পাহাড়ি আস্তানায় বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায় ৩ লাখ ১৪ হাজার ইয়াবা, ২ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ২টি দেশিয় তৈরী বন্দুক ও ৪টি গুলি।

আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, অন্তত ৩০-৩৫ বছর আগে মো. রফিক আহম্মেদ শৈশবে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। সেই থেকে তারা পরিবারসহ হ্নীলা ইউনিয়নের সুইচপাড়া ওয়াব্রাং এলাকায় বসবাস করে আসছিল। রফিক জীবিকার তাগিদে নাফ নদীতে মাছ ধরত। এক পর্যায়ে নদীপথে মাদকপাচারে জড়িয়ে পড়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে।

রফিকের চাহিদা মাফিক মাদকের চালান যোগাড় করে নবী হোসেন সীমান্তে পৌঁছে দেয়। পরে সেখান থেকে মাছ ধরার ট্রলারযোগে হ্নীলার গহীন পাহাড়ের আস্তানায় মজুদ রাখত। পরবর্তীতে ওইসব মাদক সুবিধাজনক সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করত।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রফিক মাদক বিক্রির টাকা এজেন্টদের কাছ থেকে আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে সংগ্রহ করত। এছাড়া সংগৃহীত টাকা সে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠাত। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ওই টাকা বিভিন্ন কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে টেকনাফের হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করত। হুন্ডি বযবসায়ীরা প্রাপ্ত টাকা বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামের খাতুনগজ্ঞের শাখায় প্রেরণ করত। পরবর্তীতে ওইসব টাকা ডলারে রূপান্তর করে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে থাকে। আটকদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।