ঢাকা ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

১৫৯ পোয়া বিক্রি হলো সাড়ে ৩০ লাখ টাকায়

১৫৯ পোয়া বিক্রি হলো সাড়ে ৩০ লাখ টাকায়

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর ধলঘাটার জেলে মোজাম্মেলের জালে ধরা পড়া ১৫৯টি কালো পোয়া বিক্রি হয়েছে ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। যদিও জেলে মোজাম্মেল মাছগুলোর দাম হাঁকিয়েছিল ২ কোটি টাকা। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মা মরিয়ম ফিশিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান মাছগুলো ক্রয় করে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু। জেলে মোজাম্মেলের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান জানান, সাইজে ৬ কেজি ওজনের মাছগুলো এক করে দাম দেয়া হয়েছে ১৪ লাখ টাকা। আর যে মাছগুলো ৯ কেজির উপরে ছিল সেগুলোর দাম এসেছে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিষয়টি নিশ্চিত করে ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোক্তার আহমদ বলেন, মোজাম্মেলের বাড়ি আমার ওয়ার্ডে শরইতলা সাইটপাড়া এলাকায়। দুই ছেলে এবং একমেয়ে নিয়ে ৫ সদস্যের সংসার। মোজাম্মেল খুবই দরিদ্র। ভোরে মাছ ধরে বিক্রির টাকায় তাদের সংসার চলে। আল্লাহপাক গত শুক্রবার তার জালে একসাথে ১৫৯টি পোয়া মাছ ধরা পড়ায় বাড়ির সবাই খুবই খুশি। দরিদ্র মোজাম্মেল একদিনেই লাখপতি হওয়ায় এলাকার মানুষও খুশি। মোজাম্মেলের প্রতিবেশী আতা উল্লাহ জানান, বাপদাদার পেশা হিসেবেই বহদ্দার (জেলে) মোজাম্মেল।

নিতান্তই দরিদ্র মোজাম্মেলে ঘরটি জসিমউদদীনের কবিতার সেই বর্ণনার মতো। বোটটিও অনেক পুরোনো। জোড়াতালি দিয়ে তা নিয়মিত চালান তিনি। নিজে মালিক, নিজে মাঝি (চালক) নিজে শ্রমিক। সাথে দুই ছেলে এবং এলাকার কয়েকজন নিয়ে তিনি সাগরে যান নিয়মিত। তার জালটিও আদিকালের। অন্যদিনের মতো গত শুক্রবার সাগরের মহেশখালী চ্যানেলে জাল ফেলে এক খোপে (একবারে) ১৫৯টি মাছ ধরা পড়ে জেলে মোজাম্মেল বহদ্দারের জালে। তিনি আরো জানান, ১৫৯ পোয়া মাছ ধরা পড়ার খবরে পুরো ধলঘাট ইউনিয়নে হৈচৈ লেগে যায়।

সবখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে মোজাম্মেল এবং কালো পোয়া। এলাকার বেশিরভাগ মানুষ মাছগুলো একনজর দেখতেও যান। মাছটির বায়ুথলী (ফদনা) দিয়ে সার্জিকেল বিশেষ সুতা তৈরি হয়। ফলে এ মাছের মূল্য বেশি। তাই সবকিছু হিসাব করে মোজাম্মেল ১৫৯টি পোয়ার দাম হাঁকান ২ কোটি টাকা। স্থানীয়দের মতে, একেকটি মাছ ৬ কেজি থেকে ৯ কেজি ওজনের। সে হিসাবে মাছগুলোর দাম কোটি টাকার উপরে আসার কথা। কিন্তু চট্টগ্রামে সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত হয়েছেন মোজাম্মেল বহদ্দার। তিনি মাত্র সাড়ে ৩০ লাখে বিক্রি করে ফিরেছেন মাছগুলো। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, পোয়া মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Mycteroperca bonaci। এই মাছের বায়ুথলি (এয়ার ব্লাডার) দিয়ে তৈরি হয় বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা। বায়ুথলির কারণে এই মাছের দাম বেশি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মাছের চাহিদা আছে। এর আগে সেন্টমার্টিনে গণি নামের এক জেলে এবং আরো কয়েকজনের জালে ২৫ থেকে ৩০ কেজি ওজনের পোয়ামাছ ধরা পড়ে, যা কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রচার হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত