তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
রাজনীতির ব্যাঙদের আওয়াজ এখন খুব বড় হয়ে গেছে
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রাণীকুলের মধ্যে ব্যাঙ খুব ছোট, কিন্তু তাদের আওয়াজ খুব বড়। রাজনীতির মধ্যেও কিছু ব্যাঙ আছে। কিছু ছোট ছোট রাজনৈতিক দল আছে, তাদের দেখি আওয়াজ খুব বড়। বিএনপির সাথেও এ ধরনের কিছু রাজনীতির ব্যাঙ আছে। এসব ছোট রাজনৈতিক দলের আওয়াজ খুব বড়। রাজনীতির ব্যাঙদের আওয়াজ এখন খুব বড় হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বিএনপির নির্বাচন বর্জনের হাঁকডাক এখন নির্বাচনি প্রচারণার মধ্যেই ঢাকা পড়ে গেছে। তাদের এই নির্বাচন বর্জনের ডাকে এখন কেউ আর সাড়া দেয় না, এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীরাও সাড়া দেয়নি। বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, বিএনপির নেতারা বের হয়ে তৃণমূল বিএনপি গঠন করেছেন। আমাদের এখানেও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) আসনের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান-মেম্বার, মেয়র ও কাউন্সিলরদের সাথে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে পৌরসভার আলহজ অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটরিয়ামে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে দেশে একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছ। গ্রামে-গঞ্জে হাঁটে মাঠে-ঘাটে সব জায়গায় আজ নির্বাচনের আলোচনা। নির্বাচনের ঝড় এখন সমগ্র বাংলাদেশে শুরু হয়ে গেছে। সমগ্র বাংলাদেশে বিএনপি’র শত শত নেতা আজকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, নির্বাচনের সাথে যুক্ত হয়েছেন। তাদের নির্বাচন বর্জনের যে ডাক, সেটি ভন্ডুল হয়ে গেছে। এখন তারা দেশে আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করার অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ঢাকায় একটি ট্রেনের মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুন জ্বালিয়ে চারজন মানুষকে হত্যা করেছে। একজন মা মৃত্যুর মধ্যেও সন্তানকে বুকে আগলে রেখেছে, বুক থেকে অঙ্গার হয়ে যাওয়া সন্তানকে সরানো যাচ্ছে না। এই ধরনের বিভৎসতা কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারে না, যেটি বিএনপি করছে। পৃথিবীর কোথাও এগুলো ঘটছে না। সুতারাং, এই বিএনপি আর জনগণের কাছে আসার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আগুনসন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। এখন বিএনপি নেতাদেরও দেখা যাচ্ছে না। তারা ঢাকা শহরে নাকি লিফলেট বিলি করছে। আজকে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ, এদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাচ্ছে। আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে জনগণের শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। এদের নির্মূল করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যাদের ওপর ভরসা করেছিল, তারাও বলেছে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। ক’দিন আগে জাতিসংঘ বিবৃতি দিয়েছে- নির্বাচনে যাতে সবাই ভোট দিতে পারে। তার মানে বিএনপি যে নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধেই তারা সেটি বলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে- একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হওয়া দরকার, আমরা সেটাই করতে চাই, সেটিতে বাধা দিচ্ছে বিএনপি। আমরা আশা করব, ভিসানীতি যেটি ঘোষণা করা হয়েছে, বিএনপিসহ যারা এই নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে, তাদের ওপরই এই ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে, ইনশাল্লাহ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জনপ্রতিনিধিরাই সমাজের স্বাভাবিক নেতা। নির্বাচন উপলক্ষ্যে তাই আমি প্রথম বৈঠকটি আপনাদের দিয়েই শুরু করেছি। জনপ্রতিনিধিরাই কারো বাড়ির উঠানে, চায়ের দোকানে মাঠে-ঘাটে ও মসজিদের আঙ্গিনায় থাকেন। আপনারা যে কথাটি মানুষকে বলবেন, সেটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে। আপনারাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে বার্তা পৌঁছানোর কাজটি করেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আমি সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা এবং নিষ্ঠা দিয়ে চেষ্টা করেছি এলাকার মানুষের পাশে থাকা এবং এলাকার উন্নয়ন করার জন্য। চেষ্টা করেছি সব মানুষের এমপি হওয়ার জন্য। গত ১৫ বছর সবার জন্য আমার দুয়ার খোলা ছিল। কে আমাকে ভোট দিয়েছিল, কে দেই নাই, ভবিষ্যতে কে দিবে কিংবা দিবে না, সেটি আমি মাথায় রাখি না। যেই আমার কাছে আসে চেষ্টা করি উপকার করার।
গত ১৫টি বছর সব মানুষের জন্য আমার দরজাটি খোলা রেখেছি। কে আমাকে ভোট দিয়েছিল কিংবা দেয়নি, কিংবা ভবিষ্যতে দেবে না তা আমি কখনো ভাবিনি। অন্তত চেষ্টা করি কথা দিয়ে হলেও শান্তি দেয়ার। এভাবেই সবসময় চেষ্টা করেছি।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ইফতেখার হোসেন বাবুল, জহির আহমদ চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান নুর কুতুবুল আলম, ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন, এম এ মান্নান চৌধুরী, ফজলুল কবির গিয়াসু, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার, দানু মিয়া, আবু জাফরসহ ইউপি সদস্যরা বক্তব্য দেন।