শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার দক্ষিণ শিমুলিয়ায় সুপ্রিমকোর্ট বিভাগের হাইকোর্ট রিটের আদেশ অমান্য করে মাসুদ পারভেজ নামের একজনের জমি দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউপির দক্ষিণ শিমুলিয়া মৌজায় ওই জমিতে সম্প্রতি স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে নিয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজন স্থাপনা নির্মাণ করে বসবাস করছে।
ভুক্তভোগী মাসুদ পারভেজ আশুলিয়ার দক্ষিণ শিমুলিয়া এলাকার মৃত ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউপির দক্ষিণ শিমুলিয়া মৌজাস্থিত সিসএস-৪৬৩, এসএ-৬৪৫ এবং আরএস ৩১৯ খতিয়ানে সিএস ও এসএ দাগ নং ৩৩৯, ৪৩৭, ৫১৫, ৫১৭, ৫২৭, আরএস ৪৫২, ৪৫৭, ৪৯৮, ৭৫১ ও ৮০৩ নং দাগে মোট জমি ১৯৪ শতাংশ। এসএ রেকর্ডীয় মালিকগণের মধ্যে ঘরোয়া আপস বণ্টনে নালিধী দাগের সম্পত্তি নিপেন্দ্র কুমার চক্রবর্তী গংরা প্রাপ্ত হয়ে ভোগদখলে থাকাবস্থায় ০১/১০/১৯৭৩ইং তারিখে সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ১৮৮৮৬নং দলিলমূলে ইব্রাহিম মিয়া গংদের কাছে বিক্রি করে দখল বুঝিয়ে দেন। পরে এসএ রেকর্ড অনুযায়ী নিজ নিজ নামে নামজারি ও জমাভাগ করে খাজনা পরিশোধ করেন এবং এক স্ত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন, তিন ছেলে যথাক্রমে মাসুদ পারভেজ, আশিকুর রহমান (রাসেল), রিফাত জামান (সোহেল) এবং এক মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকাকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন হাজী ইব্রাহিম মিয়া। ওই সম্পত্তি বিগত ২০২২ সালে খাজনা দিতে গেলে তা ‘ক’ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে জানতে পারেন। এর পরই বিগত ১৩/০৪/২০২২ ইং তারিখে মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন মামলা নং ৪৮৮০/২০২২ দায়ের করেন।
সরেজমিন আশুলিয়া শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শিমুলিয়া মৌজাস্থিত ওই জমিতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো জমি বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা। ওই জমি দখলে নিয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করছে। বাউন্ডারির ভেতরে বেশ কয়েকটি ঘর করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ওই জমি তাদের দান করা হয়েছে। তবে কে দান করেছে, সে বিষয়ে সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেনি।
ভুক্তভোগী মাসুদ পারভেজ জানান, পিতার ক্রয় সূত্রে তারা জমির মালিক হয়ে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে পুরো জমি শান্তিপূর্ণভাবেই ভোগ দখল করে আসছিলেন। কিন্তু রেবেকা নামের এক হিজড়া শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুরুজের নির্দেশে ওই জমির বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে ফেলে স্থাপনা নির্মাণ করেন। অথচ মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট বিভাগের হাইকোর্ট রিট পিটিশন মামলার আদেশের আলোকে ওই জমিতে কোনো প্রকার কাজ করা থেকে বিরত থাকার আদেশ জারি করা হয়। এই আদেশ অমান্য করে বিগত ১০/০৩/২০২৩ইং তারিখে বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে দিয়ে পুরো জমি দখলে নেয়। পরে সেখানে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজনকে পাহারাদার হিসেবে নিযুক্ত করেন। বিষয়টি ঢাকা জেলা প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার ভূমি (আশুলিয়া) সার্কেলকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজন থাকায় তার জমিতে তিনি যেতে পারছেন না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আশুলিয়া থানার ওসি এএফএম আবু সায়েদ জানান, তিনি থানায় সবেমাত্র কয়েক দিন হলো জয়েন করেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে কেউ অভিযোগ করলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।