ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে মুনিয়া খান রোজা (২৫) নামে নারী গাইনি চিকিৎসক পরিচয়দানকারী এক প্রতারককে আটক করেছেন আনসার সদস্যরা। অভিযুক্ত মুনিয়া চাঁদপুর সদরের হামান কর্দ্দি গ্রামের প্রয়াত মো. করিম খানের মেয়ে। বর্তমানে তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে নতুন ভবনের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে তাকে আটক করার পর মধ্যরাতে তাকে শাহবাগ থানা হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মুনিয়া বলেন, আমি ভয়ে প্রথমে বলেছিলাম আমি ঢাকা মেডিকেলের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক। কিন্তু আমার ভুল আমি বুঝতে পেরেছি। সত্যিকার অর্থে আমি কোনো চিকিৎসক না বা চিকিৎসা পেশার সঙ্গে আমি জড়িত না। আমি নীলক্ষেত থেকে ৫৫০ টাকা দিয়ে অ্যাপ্রোন কিনি এবং মিটফোর্ড এলাকা থেকে স্টেথোস্কোপ ক্রয় করি। নীলক্ষেত থেকে একটি আইডি কার্ডও বানিয়েছি। তিনি বলেন, আমি মূলত ঢাকা মেডিকেল থেকে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাই। এ ছাড়া ডাক্তারদের অ্যাপ্রোন পরে তাদের অগোচরে রুমে ঢুকে তাদের মূল্যবান মোবাইলসহ অন্যান্য সামগ্রী চুরি করি। আমার ভুল হয়ে গেছে এবারের মতো আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি আর জীবনে এ কাজ করব না। এদিকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ওই নারী আইসিউর ভেতর থেকে চিকিৎসকের পোশাক পরা অবস্থায় বেরিয়ে যাচ্ছেন। পরে আনসার সদস্যদের সন্দেহ হলে তাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং পরবর্তীতে তিনি চিকিৎসক নন বলে জানান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাসপাতালের আনসার প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) উজ্জ্বল বেপারী। তিনি বলেন, ঘটনার সময় নতুন ভবনের আইসিইউর দায়িত্বে ছিলেন আনসারের এপিসি জামান উদ্দিন। তিনি আমাকে বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে জানান সন্দেহজনক গতিবিধি হওয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা এক নারীকে আটক করেছি। তখন ডাক্তারদের ব্যবহারের অ্যাপ্রোন পরা ছিলেন। কোনোভাবেই তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি ডাক্তার নন। ওই সময় আমাদের চিকিৎসকের মোবাইলও হারানো যায়। এতে আমাদের সন্দেহ হওয়ায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে আমাদের জরুরি বিভাগে নিরাপদে নিয়ে আসি। একপর্যায়ে তিনি চিকিৎসক নন বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, অভিযুক্ত ভুয়া নারী চিকিৎসককে আনসার সদস্যরা আমাদের পুলিশ ক্যাম্পে দিয়ে যায়। পরে আমরা ওই নারীকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।