ঢাকা ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আরো দুই ডিগ্রি কমবে তাপমাত্রা

ঢাকার বাইরের জেলায় জেঁকে বসেছে শীত

ঢাকার বাইরের জেলায় জেঁকে বসেছে শীত

ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দিনের তাপমাত্রা বাড়ালেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। রাজধানীতে কিছুটা কম অনুভূত হলেও ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে জেঁকে বসেছে শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা টেকনাফে ২৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক ছিল।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সোমবার সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। স্থানীয়রা বলেছেন, দিনে সূর্যের দেখা মিললেও সন্ধ্যা থেকে হাড়কাঁপানো শীত। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়ে সমানতালে। হাড়কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে কাজে যেতে দেখা যায় শ্রমিক, ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের। সাধারণত বয়স, বাতাসের গতি, কুয়াশার প্রকোপ, সূর্যের কিরণকাল ইত্যাদির ওপর শীতের অনুভূতি নির্ভর করে। বাতাসের গতি কম থাকলেও শীতের অনুভূতি ও প্রকোপ বেশি মনে হয়। বর্তমানে প্রকৃতিতে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বয়স বেশি হলে শীতের অনুভূতি বেশি হয়। এদিকে শীতজনিত নানা রোগ বাড়ছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের তথ্য মতে, গতকাল রোববার বিকাল ৫টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় এআরআই (অ্যাবস্ট্রাক্টিভ রেসপিরেটরি ইনফেকশন)-এ বেশ কয়েকজন রোগী শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, আমাশয়, জ্বর ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শৈত্যপ্রবাহের মতো আবহাওয়া বিরাজ করছে। তবে আপাতত দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা দেখছেন না আবহাওয়াবিদেরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় শীতের শুষ্ক বাতাস সারা দেশে ছড়াতে পারছে না। ফলে আপাতত শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা নেই। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় হালকা শীতের অনুভূতি ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে পারে। এরপর শীত বাড়তে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে তাপমাত্রা কমেছে। আজ সোমবার তাপমাত্রা আরো দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যেতে পারে। অন্তত টানা তিন দিন এভাবে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। উত্তরাঞ্চল, পশ্চিমাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি জেলার তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির নিচে নেমে যাবে। আস্তে আস্তে এটি আরো কিছু এলাকায় বিস্তার করতে পারে। মূলত সেসব অঞ্চলে গতকাল তাপমাত্রা ১১-১২ ডিগ্রি ছিল, তা কমে ১০ এর নিচে নামতে পারে। একই সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা গড়ে দুই থেকে এক ডিগ্রি কমে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ভারতের দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ি জেলা থেকে নতুন করে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা বিস্তার করছে। গতকাল রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণভাগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবেশ শুরু করেছে। সম্ভাব্য এই শৈত্যপ্রবাহ প্রতিদিন অল্প অল্প করে দেশের পূর্বদিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ অতিক্রম করে ভারতের আসাম মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্যের ওপর দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। এই শৈত্য প্রবাহ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে: খুলনা বিভাগের চূয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার উপর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত