আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। একইসঙ্গে নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে ফোরামটি। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকসহ সার্বিক কার্যক্রম’ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মুখপাত্র ও পরিচালক আব্দুল জাব্বার খান। আব্দুল জাব্বার খান বলেন, অতীতের মতো এবারও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে এবং স্বেচ্ছায় প্রায় দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আসবেন। এরইমধ্যে প্রায় ১৫টি আন্তর্জাতিক সংগঠন ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সঙ্গে নির্বাচনের পরিবেশ, রাজনৈতিক দলের ভূমিকা, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ করেছে। তিনি বলেন, এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের সহকারী ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চিফ অব স্টাফ, সাবেক কংগ্রেসম্যান, ওএসসিইর সার্টিফাইড নির্বাচন পর্যবেক্ষকসহ ১০ জন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পর্যবেক্ষণে আসবেন বলে আমরা বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি। এছাড়া যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, পোল্যান্ড, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসবেন। আব্দুল জাব্বার খান বলেন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সদস্য সংগঠনের ৬ হাজার ৩০১ জন স্থানীয় পর্যবেক্ষক কমপক্ষে ২ শতাধিক আসনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি স্থানীয় নাগরিক, পর্যবেক্ষক ও সংবাদকর্মীরা সচেতন হলে জাল ভোট দেওয়া, ব্যালট বক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই, কেন্দ্রে আসা ও ভোটদানে বাধা দেওয়া, ভোটের আগে অবৈধ অর্থের লেনদেন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রয়েছে, যা বহির্বিশ্বে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের এ মুখপাত্র বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি নির্বাচনকে আরও প্রাণবন্ত করবে।
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ২৭টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করছে। এ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে না হলেও আমাদের মনে হচ্ছে সাধারণ মানুষ নির্বাচনমুখী। এবারের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ কতটা স্বতঃস্ফূর্ত হচ্ছে তা জানার জন্য আমাদের আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদলগুলো অংশ না নিলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফোরামের চেয়ারম্যান আবেদ আলী বলেন, রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব কৌশল অনুযায়ী নির্বাচনে আসবে কি আসবে না সেটা তাদের বিষয়। আমরা মনে করছি, নির্বাচনে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট হলে নির্বাচন স্বচ্ছ হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত রয়েছেন- ইএমএফ সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া, ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী, পরিচালক সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ, ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।