কক্সবাজারের মহেশখালীতে প্যারাবন ধ্বংস করে ‘এরশাদ গংয়ের বিরুদ্ধে ২৫০ একর বনভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ওই সব জমিতে চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠ গড়ে তুলেছে চক্রটি। গতকাল দুপুরে প্যারাবন ধ্বংস করে অবৈধ লবণ মাঠের খেত নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। উপকূলীয় বনবিভাগ কক্সবাজারস্থ উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ আবুল কালাম আজাদ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বনবিভাগ ও স্থানীয়দের সূত্র মতে, এরশাদ নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে একদল দখলবাজ চক্র মহেশখালী গোরকঘাটা রেঞ্জের ঝাপুয়া বিটের আওতাধীন আমাবশ্যাখালী এলাকায় বিপুল পরিমাণ প্যারাবন ধ্বংস চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠ গড়ে তুলে।
স্থানীয় বনবিভাগ ইতিমধ্যে কয়েক দফা অভিযান চালায়। তবুও কোনো মতেই থামছে না দখলবাজ চক্রের থাবা।
কক্সবাজারস্থ উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ আবুল কালাম আজাদ ‘দখলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মহেশখালীতে জবরদখলকৃত এলাকায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকালও ঝাপুয়া বিটের আমাবশ্যাখালী এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়।
তিনি আরো বলেন, ওই দখলবাজ চক্র এরশাদ গংদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বনবিভাগ পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্য ধারায় আরো দুইটি মামলা চলমান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বনভূমিতে স্থাপিত সকল অবৈধ ঘেরে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হবে। দেশের উপকূলের রক্ষাকবচ প্যারাবন ধ্বংস করে বনভূমিতে গড়ে উঠা স্থাপনা এবং পরিবেশ ধ্বংসকারী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের সূত্র মতে, এরশাদসহ প্যারাবন দখল মামলার অধিকাংশ আসামি প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করেন। দখলদারেরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় মহেশখালীর বিভিন্ন এলাকায় প্যারাবন নিধনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
বন কর্মকর্তারা বলছেন, আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় দখলকৃত প্যারাবন উচ্ছেদ করতে পারছে না বন বিভাগ। দিনরাতে চিংড়িঘেরগুলোয় পাহারায় রাখা হয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের। বাইরের কেউ ঘটনাস্থলে গেলে গুলি ছোড়া হয়।
সূত্র মতে, মহেশখালী উপকূলীয় বন বিভাগের গোরকঘাটা রেঞ্জের আওতায় সাতটি বিটের অধীন ৪২ হাজার ২৯৪ একর প্যারাবন (বনভূমি) রয়েছে। এর মধ্যে বন বিভাগের দখলে আছে ৩৭ হাজার ১৯৮ একর। বন বিভাগের তথ্য বলছে, অবশিষ্ট ৫ হাজার ৯৬ একর বনভূমি গত ১০ বছরে দখলে রেখেছেন ৯৩০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ সময় কাটা হয়েছে প্রায় ৯ লাখ বাইন ও কেওড়াগাছ।