সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেওয়া সিম বাগানের রঙিন ফুলে ফুলে ভরে গেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে ফুলের বাগান- এ যেন এক অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি। হালকা কুয়াশায় শীতের সকালে বিস্তীর্ণ মাঠে শিমের বাগান দেখলে মনজুড়ে যায়। রবি মৌসুমে শুরুতেই মাচায় ওঠা শিমের সবুজগাছে এমন মনোরম দৃশ্যে ভরে উঠেছে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের কাজলগ্রাম। শিম বাগানের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেওয়া রঙিন ফুলে স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের কৃষক বুলবুল ইসলাম। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৩২ হাজার ৮০৯ হেক্টর। এবার ১৮০০ শত হেক্টর জমিতে শাকসবজির চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই বীরগঞ্জ উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম শীতকালীন সবজি শিম। অন্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন শিম চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। শিমচাষি বুলবুল ইসলাম জানান, এ বছর আমি দেড় বিঘা জমিতে আগাম শিম চাষ করেছি। এতে জমি তৈরি, হালচাষ, রাসায়নিক সার, জৈব সার, কীটনাশক, মাচায় ও শ্রমিকের খরচসহ সর্বমোট ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তবে আমার শিমবাগানে ফলন ভালো হয়েছে পুরো বাগান বহুসংখ্যক ফুলে ও ফলে ভরপুর এজন্য আগাম ভালো দামে শিম বিক্রি করেছি। শুরু দিকে প্রতি কেজি শিম সপ্তাহজুড়ে পাইকারি বাজারে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করেছি কিন্তু বর্তমানে বাজারে পর্যাপ্ত শিম আসায় প্রতি কেজি শিমের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি করছি এখন পর্যন্ত আমার শিম বাগান হতে সর্বমোট ২ লাখ টাকা শিম বিক্রি করছি। আশা করি, সময়ের সাথে সাথে ৩ লাখ টাকা পার বিক্রি করতে পারব। তিনি আরো বলেন, আমার শিমবাগানে প্রতিনিয়ত বেশ কয়েকজন শ্রমিক কাজ করে এবং দুই থেকে তিন দিন পর পর খেত থেকে শিম সংগ্রহ করে বাজারজাত করি ও চার থেকে পাঁচ দিন পর কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। কারণ, মাঝেমধ্যে পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে এবং শিম গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে অধিকাংশ পাতা হলুদ হচ্ছে তারপর বাম্পার ফলন হয়েছে দাম ভালো পাচ্ছি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, এ বছর উপজেলাজুড়ে ১ হাজার ৮০০ শত হেক্টর জমিতে সবজির চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে ১০ হেক্টর জমিতে আগাম শিম চাষ করছে চাষিরা।
তবে কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় অধিকাংশ কৃষক শিম চাষে ঝুঁকছে এবং শিম চাষে রোগবালাই, পোকা আক্রমণে রক্ষায় বিভিন্ন ফাদ ব্যবহারসহ কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদানে মাঠপর্যায়ে কৃষি অফিস কাজ করছে।