পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি : মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ

দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঠলেও হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। গতকাল সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আর গত মঙ্গলবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে তাপমাত্রা ৭-এর ঘরে নেমে আসায় বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এতে করে তীব্র শীত দুর্ভোগে পড়েছে এ সীমান্ত জেলা। এতে করে হিমশীতল হাওয়ায় কনকনে শীত জেঁকে বসায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাত থেকে সকাল অবধি কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে পথঘাট। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকালের পর থেকে ফের বাড়ে শীত।

বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশা কাটিয়ে ভোরেই জেগে উঠেছে পুবালি সূর্য। তবে কনকনে শীতের তাণ্ডবে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই হিম বাতাসে বইছে শীতের ঝঞ্জা। রাত ৯টার মধ্যে প্রায় কোলাহল থেমে যায় শহর ও গ্রামের হাটবাজারগুলোতে। রাত বাড়তে থাকলে কুয়াশার সঙ্গে শিশির ঝরা বৃষ্টি পড়তে দেখা যায়। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। কনকনে শীতে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। বিপাকে যানবাহন চালকরাও। জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো কাজে বের হলেও কনকনে শীতের কারণে শহরের অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

নাজিম উদ্দিন, সাহেরুল ও আমজাদ আলী নামের স্থানীয়রা জানান, নতুন বছরের দুই দিন ঘন কুয়াশার পর আজ ভোরে সূর্য দেখা গেছে। তবে হাড় কাঁপছে কনকনে শীতে। হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। আর রাতে খুব ঠান্ডা অনুভব হয়েছে। ভ্যানচালক আবুল কালাম আজাদ ও নুরু মিয়া বলেন, সকালেই ঝকঝকে রোদ উঠেছে। তবে প্রচন্ড ঠান্ডা। রাতে কী পরিমাণ ঠান্ডা পড়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। রোদ উঠায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। ভ্যান নিয়ে বের হয়েছি। ভ্যানে যাত্রীরা চড়ায় ইনকাম হচ্ছে। পাথর শ্রমিক আরশেদ, জামাল ও জুয়েল জানান, দুই দিন পর আজ রোদ উঠেছে। কিন্তু প্রচণ্ড শীত। যে শীতে হাড় কাঁপছে। কিন্তু কী করব জীবিকার তাগিদে কাজে বেরিয়েছি। একই কথা বলেন চা শ্রমিকরাও। তবে শীত উপেক্ষা করেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীরা ভোটযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ও নির্বাচনি সভার মধ্যদিয়ে শীতে ঘাম ঝরাচ্ছেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। এদিকে শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা। জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ সকালে সূর্য দেখা গেছে। তবে গত দুই দিনের চেয়ে তাপমাত্রা কমে গতকাল সকাল ৯টায় ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে, যা এই মৌসুমে সর্বনিম্ন। এতে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এ জেলা হিমালয়-বিধৌত এলাকায় অবস্থান হওয়ায় এখানে অন্যান্য এলাকা থেকে শীত আগে নামে। এ সময়টাতে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। আগামীতে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে।