দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের নির্বাচনি প্রচারণা জমে উঠেছে। এ আসনে পাঁচ প্রার্থী নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নির্বাচনি এলাকা। এ আসনে ভোট ব্যাপক যুদ্ধ হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. আব্দুল আজিজ এমপি (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট (ঈগল)। এ আসনে অপর তিনজন প্রার্থী হলে বিএনএম মনোনীত প্রার্থী গোলাম মোস্তফা (নোঙ্গর), জাতীয় পার্র্টির মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম উজ্জল (ট্রাক)। নৌকা ও ঈগল প্রতীকের দুই শক্তিশালী প্রার্থী এখন নির্বাচনি এলাকা ভোট প্রার্থনায় চষে বেড়াচ্ছেন। ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ এনে দলের একাংশের নেতাকর্মীরা নৌকা ডুবাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যেও এর চরম প্রভাব পড়েছে। তবে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ভোট প্রার্থনা করছেন নৌকার কর্মী-সমর্থকরা। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা বলেছেন, এমপির আত্মীয় স্বজন সম্পর্কেও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এজন্য অনেক নেতাকর্মী ঈগলের পক্ষে কাজ করছেন। ঈগলের বিজয় আশাবাদী বলে দাবি করেন তারা। নৌকা সমর্থক অনেক দলীয় নেতাকর্মী বলেছেন, ঈগলের পক্ষে কাজ করেও বিজয়ে কেউ গ্যারান্টি দিতে পারবে না। এ নির্বাচনি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সেই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। এ ভোটযুদ্ধে এবারও নৌকা বিজয় হবে বলে আশাবাদী। এ আসনে অপর তিন প্রার্থী নির্বাচনি এলাকায় ভোট প্রচার-প্রচারণায় তেমন জমে উঠেনি। তবে এলাকায় তাদের কিছু পোস্টার ব্যানার রয়েছে। এ নির্বাচনে তারা প্রার্থী হয়েও প্রচার-প্রচারণায় জোর দিচ্ছেন না এবং কী জন্য নির্বাচনি মাঠে তাদের তেমন দেখা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে ভোটাররা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. আব্দুল আজিজ এমপি (নৌকা) বলেন, আমার কোনো আত্মীয়স্বজন সম্পর্কে অনিয়ম দুর্নীতির প্রশ্নই ওঠে না। আমি পেশায় একজন চিকিৎসক। মানুষের সুখ-দুঃখের সেবা করা আমার কাজ। গত ৫ বছরে এ নির্বাচনি এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছি। সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি এবং এখনো আছি। ভোটরের ভোটকেন্দ্রমুখী করতে দিন-রাত কাজ করছি। আশা করছি জনগণ আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী সুইটের (ঈগল) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের কাছে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে কেউ যদি প্রার্থী হয়, তাহলে সে হয় বিদ্রোহী প্রার্থী। দলের কিছু মানুষ ভূল বুঝে বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে থাকতে পারে। কিন্তু ভোট দেবে তারা নৌকা মার্কাতেই। স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট (ঈগল) বলেন, আমি যেন নির্বাচন করতে না পারি, এজন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বশেষ হাইকোর্ট থেকে প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে নির্বাচনে লড়ছি। গ্রামের সাধারণ কৃষক, দিন মজুর ও দলের বঞ্চিত নেতাকর্মীই আমার প্রাণ। এসব মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে, শয্যভান্ডার খ্যাত এ অঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রমুখী করতে ব্যাপক চেষ্টা করছি। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে আমি জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ। এ আসনের নারী পুরুষ মিলে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৪৩ জন। আগামী ৭ জুনায়ারি সারাদেশের ন্যায় এ আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন ভোটগ্রহণে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনি এলাকায় টহল শুরু করেছেন।