ঢাকা ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাতক্ষীরায় শিশু সন্তানকে হত্যার পর পুড়িয়ে দিল বাবা

সাতক্ষীরায় শিশু সন্তানকে হত্যার পর পুড়িয়ে দিল বাবা

সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ধলবাড়িয়া গ্রামে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আরিফ বিল্লাহকে হত্যা করে ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার মাদকাসক্ত বাবা ইয়াসিন আলীর বিরুদ্ধে। গতকাল ভোররাতে ধলাবাড়িয়া মাঠপাড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইয়াসিন আলীকে আটক করেছে সদর থানার পুলিশ। আরিফ বিল্লাহ ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাষ- পিতাকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আরিফের মা রোকেয়া খাতুন জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার চুপড়িয়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে ইয়াছিন আলীর সাথে আমার ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। ৩ বছর আগে ধলবাড়িয়া মাঠপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পান তিনি। এরপর থেকে একমাত্র সন্তান আরিফবিল্লাহসহ স্বামীকে নিয়ে আমি সেখানে বসবাস করতে থাকি। রোকেয়া খাতুন আরো বলেন, আমার স্বামী মাদকাসক্ত ও অস্ত্র মামলার আসামি। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আমার বিরোধ লেগেই থাকে। গত মঙ্গলবার স্বামী আমাকে মারপিট করলে আরিফকে নিয়ে আমি আমার নানা ধুলিহর গ্রামের ইজ্জত আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেই। গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নানার বাড়ি থেকে আরিফকে নিয়ে চলে আসে ইয়াছিন। পরে আর মোবাইলে যোগাযোগ হয়নি। সেদিন ভোর সাড়ে ৩টার দিকে মোবাইল ফোনে খবর পাই, আমাদের বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। তাৎক্ষণিক স্বজনদের নিয়ে বাড়িতে এসে জানতে পারি, ছেলেকে ঘরের মধ্যে হত্যা করে দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে ঘরে আগুন দিয়েছে ইয়াসিন। আরিফ বিল্লাহর দাদী মলুদা খাতুন জানান, ইয়াছিন তার ছেলেকে হত্যা করে ঘরে আগুন লাগিয়ে তার মামার বাড়ি আগরদাড়িতে চলে যায়। সেখানে সে সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই পিটিয়েছে। পরে ইয়াছিনকে ছিকল দিয়ে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোকন আল জামান জানান, আরিফ বিল্লাহ এবার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা উঠেছে। এর আগে সে কয়েক পারা কোরআন মুখস্ত করেছিল। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইয়াসিন আলীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন রোকন আল জামান। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম জানান, ইয়াছিন আলীকে আটক করা হয়েছে। সম্ভবত সে মাদকাসক্ত। থানায় সে অসংলগ্ন আচরণ করছে। ছেলেটির দেহ পুড়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে। চেনা যাচ্ছে না এমন অবস্থা। তিনি আরো জানান, ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরে জানা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত