দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

কুমিল্লায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন তিন প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কুমিল্লা প্রতিনিধি

কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে গতকাল কুমিল্লার ১১টি সংসদীয় আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এজেন্টদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেয়া, কোথাও কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, সিল মারা ব্যালট উদ্ধার, কেন্দ্র দখলসহ কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ এনে জেলার তিনটি আসনের তিন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন। তারা হলেন- কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু, কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান ও কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণের আংশিক, লালমাই) আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জোনাকী মুন্সী।

চান্দিনা আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু দুপুর ১২টার দিকে তার প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ আসনের ৮৯টি কেন্দ্রের সবকটি কেন্দ্র নৌকার সমর্থকরা দখল করে নিয়েছে। অধিকাংশ কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভোরে ব্যালট পেপার আসার পরই নৌকার কর্মীরা ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারেন। এরপর যারা ভোট দিতে আসেন, তাদের হাতের সিল মারা ব্যালট পেপার ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখন বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়ে। নাওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দোল্লাই নবাবপুর উচ্চবিদ্যালয়সহ চান্দিনার অন্তত তিনটি কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। তিনি এ আসনের সব কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচন দাবি করেছেন তিনি। টিটু চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

এ আসনের নৌকার প্রার্থী ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে নৌকার নির্বাচন সমন্বয়কারী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ফেল করার আশঙ্কায় থাকলে প্রার্থীরা এমনই অনেক কথা বলেন।

চান্দিনা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার জাবেদ মোহাম্মদ শোয়াইব জানান, আমরা যতগুলো কেন্দ্রে আগে সিল মারার খবর পেয়েছি, সেসব ভোট বাতিল করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন মহলকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

এদিকে জেলার চৌদ্দগ্রাম আসনে দুপুর ১২টায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে নৌকার প্রার্থীর লোকজন তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে প্রকাশ্যে নৌকাতে সিল মারতে থাকে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একাধিকবার অভিযোগ করেও তার কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এ আসনের নির্বাচন বাতিল করে পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি। এ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র।

দেবীদ্বার আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকার লোকজন সুযোগ পেলেই জাল ভোট মারে। এর মধ্যে পদ্মকোট ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট দিয়ে বাক্সে ভরা হয়। কিন্তু বাইরে ভোটার উপস্থিত ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। আমার কর্মী ও এজেন্টরা চ্যালেঞ্জ করলে বিষয়টি ধরা পড়ে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, কিছু স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চান্দিনায় সিল মারা ব্যালট জব্দ করে বাতিল করা হয়েছে। একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।