পাবনায় ভোট বর্জন, ভোটার উপস্থিতি কম, জাল ভোট, এজেন্টদের বের করে দেয়া ও জোরপূর্বক নৌকায় ভোট প্রদানসহ নানান অভিযোগের মধ্যদিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে হয়েছে। পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে নৌকার পক্ষে জালভোট দেওয়ায় পোলিং অফিসারকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে পাবনার পাঁচটি সংসদীয় আসনের কোথায়ও বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাবনা-২ আসনের (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী কন্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী জোরপূর্বক নৌকায় জাল ভোট ও তার এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন। গতকাল দুপুরে আড়াইটার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ডলি সায়ন্তনী সাংবাদিকদের জানান, আমার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে ভোটারদের নৌকা প্রতীকের সিল দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমি নিজে হাতে কয়েকটা ধরেছি। প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। তিনি আরো বলেন, সুজানগরের মোহাম্মদদীয়া দাখিল মাদ্রাসা, মানিকহাট স্কুল এবং সুজানগর পৌর এলাকার অধিকাংশ কেন্দ্রে জোর করে ভোট কেটে নেয়া হয়েছে এবং আমার নোঙ্গর মার্কার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাবনা-২ আসনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার সুখময় সরকার বলেন, আমার কাছে উনি কোনো অভিযোগ দেননি। অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে। উনি অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে পাবনা-৫ (সদ্র) আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো. জাকির হোসেন এবং পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ এজেন্টদের বের করে দেয়া ও জোরপূর্বক নৌকায় ভোট প্রদানের অভিযোগ করেছেন।
পাবনা-১ আসনে (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) নৌকার পক্ষে জালভোট দেওয়ার সময় স্বপন হোসেন নামের পোলিং অফিসারকে হাতেনাতে ধরে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিকাল ৩টার দিকে সাঁথিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার গোলাম সারওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পোলিং অফিসার হয়ে তিনি জালভোট দিচ্ছিলেন।
পাবনা-৫ (সদ্র) আসনের বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো: জাকির হোসেন পাবনা জেলা স্কুল, আদর্শ গার্লস হাই স্কুল, আর এম একাডেমি, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যায়ল, সেমিল নাজির স্কুল, মধুপুর, পুষ্পপাড়া, পিটিআই স্কুল, নাজিরপুর ও খোদাইপুরসহ বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে এসে সাংবাদিকদের জানান, প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। তার পরও নাজিরপুর ও খোদাইপুর ভোট কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে জালভোট দেওয়া হয়। আমার হাতুড়ি মার্কার এজেন্টেদের ভোট কক্ষ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়া হয়েছে। নাজিরপুর কেন্দ্রে চারটি জাল ভোট হাতেনাতে ধরা হয়। ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এটাকে ভোট উৎসব বলা চলে না। ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। ভোটের নামে সরকার তামাশা করেছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসার ও পাবনা জেলা প্রশাসক ও মুহা: আসাদুজ্জামানের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।