জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়

প্রধানমন্ত্রীকে কমনওয়েলথ ও বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামসহ বিভিন্ন দেশের অভিনন্দন

প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো অব্যাহত রয়েছে। অভিনন্দন জানিয়েছে কমনওয়েলথ, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, ব্রাজিল সরকার এবং মিয়ানমার ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসি। তিনি টুইটার অর্থাৎ এক্স মাধ্যমে দেয়া একটি পোস্টে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার নির্বাচনি বিজয়ের জন্য আমার অভিনন্দন’।

তিনি বলেন, কমনওয়েলথ সচিবালয় জাতীয় অগ্রাধিকার অর্জনে বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত এবং বাংলাদেশের জনগণ ও কমনওয়েলথ পরিবারের সব সদস্যের জন্য শেখ হাসিনার সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম; বার্ষিক সভায় আমন্ত্রণ : ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতীয় নির্বাচনে তার দলের নিরঙ্কুশ জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে এবং তার সরকারের সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ডব্লিউইএফ প্রধানমন্ত্রীকে ১৫-১৯ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের ডাভোস-ক্লিস্টার্সে অনুষ্ঠেয় ৫৪তম বার্ষিক সভায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো এক বার্তায় ডব্লিউইএফ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াব বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়ে আপনার দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অনুগ্রহ করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পক্ষ থেকে আমার অভিনন্দন গ্রহণ করুন। আমি নতুন মেয়াদে আপনার এবং আপনার সহকর্মীদের সাফল্য কামনা করি।’

তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার পূর্ণ লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম মুখিয়ে আছে।

‘আস্থার পুনঃনির্মাণ’ প্রতিপাদ্যের অধীনে ৫৪তম বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে শোয়াব বলেন, ‘আমি আপনাকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ৫৪তম বার্ষিক সভায় আমন্ত্রণ জানানোর সুযোগ নিতে চাই, যা সুইজারল্যান্ডের দাভোস-ক্লিস্টারে ১৫ থেকে ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই এই প্রচেষ্টায় আপনাকে জড়িত করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি এবং আশা করি আপনাকে দাভোসে স্বাগত জানাতে পারব।’

যথারীতি, ১০০টিরও বেশি সরকারপ্রধান, সব আন্তর্জাতিক সংস্থা, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১ হাজারটি বৈশ্বিক সংস্থা, প্রাসঙ্গিক নাগরিক সমাজ এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী মিডিয়া সর্বোচ্চ মাত্রায় এই বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিবে।

শেখ হাসিনার নতুন নেতৃত্বের ভূমিকায় তার সাফল্য কামনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে পুরোপুরি উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।

শোয়াব বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে এগিয়ে নেওয়া সাহসী সংস্কারগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান বাড়াতে সাহায্য করেছে।’

ব্রাজিলের অভিনন্দন : গত ৭ জানুয়ারি রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ব্রাজিল সরকার।

গতকাল ঢাকায় প্রাপ্ত ব্রাসিলিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বার্তায় জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ব্রাজিল সরকার ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা স্বীকার করেছে এবং নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।’

উভয় দেশের উন্নয়ন, দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পক্ষে ব্রাজিল বাংলাদেশের সাথে গভীর সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রাজিল-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরো জোরদার হয়েছে। ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনের সাইডলাইনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেছিলেন।

মিয়ানমার ও নেপালের প্রধানমন্ত্রীদের অভিনন্দন : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে ‘প্রচন্ড’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

গতকাল শেখ হাসিনাকে লেখা এক অভিনন্দন বার্তায় রিপাবলিক অব দ্য ইউনিয়ন অব মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন, মিয়ানমারের জনগণ, মিয়ানমার ইউনিয়নের প্রজাতন্ত্র সরকার ও তার নিজের পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে আমি শেখ হাসিনাকে অত্যন্ত আনন্দের সাথে আমাদের উষ্ণতম অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

তিনি অভিনন্দন বার্তায় আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের এই আস্থা ও অপ্রতিরোধ্য সমর্থন আপনার ও গত এক দশকে আপনার নেতৃত্বের প্রতি জনগণের দৃঢ় অনুমোদনের স্পষ্ট প্রতিফলন।’ তিনি বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ এবং আমাদের দুই দেশের জনগণের জীবিকার অগ্রগতি ও পারস্পরিক স্বার্থে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।’

মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মঙ্গল ও ব্যক্তিগত সুখ এবং সেই সাথে তার ভবিষ্যতের সমস্ত প্রচেষ্টায় সাফল্য কামনা করেন।

পৃথক এক বার্তায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে ‘প্রচন্ড’ নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

শুভেচ্ছাপত্রে তিনি বলেন, ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সমর্থন, বোঝাপড়া ও সহযোগিতার পাশাপাশি দুই দেশের জনগণের মধ্যে শক্তিশালী যোগাযোগ রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা পরস্পরকে সহযোগিতা করে আসছি।’ তিনি উল্লেখ করেন, দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং শক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রগুলোতে এই সম্পৃক্ততা ক্রমাগত বাড়ছে।

প্রচন্ড বলেন, ‘নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান বহুমুখী সম্পর্ক আরো জোরদারে এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে আমি শেখ হাসিনার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে এই কাজ চালিয়ে যেতে চাই। প্রচন্ড শেখ হাসিনাকে তার সুবিধাজনক সময়ে নেপাল সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি তার স্বাস্থ্য ও সুখ এবং বাংলাদেশের জনগণের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।