দেশের অষ্টম বিভাগ ময়মনসিংহের বিভাগীয় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ আসন ময়মনসিংহ-৪ (সদর)। বিগত একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ এই আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। গতকাল হেভিওয়েট এই আসনে নতুন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রয়াত ধর্মমন্ত্রী ময়মনসিংহের অবিসংবিদিত নেতা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে মোহিত উর রহমান শান্ত। এর মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহ সদরে ক্ষমতার রাজনীতিতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে মনে করছেন ময়মনসিংহ নগরীর ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: কামরুজ্জামানসহ উচ্ছ্বসিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। তাদের ভাষ্য- প্রায় এক যুগ পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পেয়েছেন ময়মনসিংহ সদরবাসী। এর আগে এই আসনে রওশন এরশাদ সংসদ সদস্য থাকলেও ক্ষমতার পুরোটা সময়জুড়েও তাকে কাছে পায়নি সদরবাসী। অসুস্থতা ও জাতীয় রাজনীতিতে রওশন এরশাদ বর্তমান সরকারের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এই আসনের বাসিন্দারা ছিল বঞ্চিত।
ফলে ময়মনসিংহ নগরীর এই আসনের ক্ষমতার শক্তিমান উৎস ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটু। তাকে কেন্দ্র করেই এই নগরীর রাজনীতি থেকে শুরু করে ক্ষমতার সবকিছুর নিয়ন্ত্রণের প্রভাব ছিল দৃশ্যমান। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মোহিত উর রহমান শান্ত সংসদ সদস্য হওয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য পেয়েছে বলে একমত পোষণ করেছেন নগরীর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী রুহুল আমীনসহ অনেকেই।
এ বিষয়ে মোহিত উর রহমান শান্ত সাংবাদিকদের বলেন, নৌকার বিজয় মানে আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতাকর্মীদের বিজয়। এই বিজয়ে উৎফুল্ল এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও। এই আসনেই কেটেছে আমার বাবা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন। এই অঞ্চলের মানুষের সুখে-দুঃখের প্রতিটি মুহূর্তে মিশে থাকতেন তিনি। আর এ কারণেই সদরের মানুষের বুকে বড় হয়েছি আমি। বাবাকে দেখে যেহেতু বড় হয়েছি, চেষ্টা করব জনগণের ভালোবাসায় বাবার কাছাকাছি যাওয়ার। তাদের সঙ্গে জন্মের পর থেকে আমার নাড়ির সম্পর্ক। তাদের অকুণ্ঠ ভালোবাসায় এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার আশির্বাদে আজ আমি সংসদ সদস্য। এই এলাকার মানুষগুলো আমাকে যেভাবে আগলে রেখেছে, আমিও তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব।
বিগত সময়ে এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন যারা : ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ সদর আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের একেএম মোশাররফ হোসেন আকন্দ, ১৯৭৯ সালে বিএনপির একেএম ফজলুল হক, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির বেগম মমতা ওয়াহাব। ১৯৯১ সালে বিএনপির একেএম ফজলুল হক, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে একেএম ফজলুল হক, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বেগম রওশন এরশাদ, ২০০১ সালে বিএনপির দেলোয়ার হোসেন খান দুলু এবং ২০০৮ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।