দেশে ফিরল যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির লাশ
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শেখ আবির হোসেনের মরদেহ দীর্ঘ ১২ দিন পর বুধবার রাতে তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়ায় পৌঁছায়। তার মরদেহ এলাকায় আসার পর সেখানে সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। রাতেই জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
গত বুধবার রাতে তার মরদেহ তাদের বাড়িতে পৌঁছালে তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে তাকে একনজর দেখতে সেখানে শত শত মানুষের ভিড় জমে। শোকে মাতম তার গোটা পরিবার। ছেলেকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন মা আঞ্জুয়ারা বেগম। ছেলের শোকে তার আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। নিহতের মা আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ছিনতাইকারীদের বাধা দেয়ায় তার ছেলেকে জীবন দিতে হয়েছে। এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর টেক্সাসের ক্রিস ফুড মার্ট নামে একটি রেস্টুরেন্টে গুলিবিদ্ধ হয়ে শেখ আবির হোসেন নিহত হন।
নিহত শেখ আবির হোসেন (৩৮) কলারোয়া উপজেলার উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ঝাপাঘাট গ্রামের মৃত শেখ আজিজুল হাকিমের ছেলে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাস করে স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লামার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যান। পড়াশোনার পাশাপাশি টেক্সাসের বুমন্ট শহরের ক্রিস ফুড মার্ট নামে একটি রেস্টুরেন্টে আবির কাজ করতেন। আবির পরিবারের পাঁচ ভাই তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট।
নিহতের ভাই শেখ জাকির হোসেন জানান, এক বছর আগে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায় তার ভাই আবির। স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে পিএইচডি শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করত। যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার ছয় মাস পর তার স্ত্রী সানজিদা আলম মজুমদার ও শিশুকন্যা আরশিয়াকে সেখানে নিয়ে যান। গবেষণা কাজের পাশাপাশি টেক্সাসের স্থানীয় ক্রিস ফুড মার্ট নামে একটি রেস্টুরেন্টে খণ্ডকালীন কাজ করতেন আবির। আবিরের স্ত্রী সানজিদা আলম তার দুই বছরের শিশুকন্যা আরশিয়াকে নিয়ে নিউইয়র্কে তার মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন। আর আবির থাকতেন টেক্সাসে। আবির যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার দুই মাসের মধ্যে তাদের বাবা আজিজুল হাকিম মারা যান। তিনি এ সময় তার ভাই হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।