ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন পাইথল ইউনিয়নের গয়েশপুর বাজারে গতকাল দুপুরে হারুন অর রশিদ নামের এক হোমিও চিকিৎসককে কুপিয়ে হত্যা করেছে রুবেল মিয়া (৩৫) নামের এক যুবক।
নিহত চিকিৎসক হারুনের ছোট ভাই পাইথল ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি কামরুল ইসলাম মেম্বারকে এর আগে ২০১৩ সালে ঘাতক রুবেল গয়েশপুর বাজারে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে এলোপাথারী কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি ছিলেন রুবেল মিয়া। আর মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন নিহত হারুন অর রশিদ। এমনটিই জানা গেছে, নিহতের স্বজন, প্রতিবেশিও থানা পুলিশ সূত্রে।
হারুন অর রশিদকে হত্যার ঘটনায় উত্তেজিত জনতা ঘাতক রুবেলের বাড়িতে গেলে আত্মরক্ষাতে রুবেল নিজ বাড়িতে আগুন দেয়। এ সময় রুবেল ও তার মা বিউটি আক্তারকে গণপিটুনি দিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানা পুলিশ ৪টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
নিহত হারুনে গয়েশপুর বাজারের সনি সিনেমা হল রোডে নিজস্ব একটি তিনতলা বাড়ি রয়েছে। সেখানে তিনি বসবাস করার পাশাপাশি ‘ফিরোজা হোমিও হল’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। তিনি পাইথল ইউনিয়নের গোয়ালবর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে। ঘাতক রুবেল একই ইউনিয়নের নেওকা গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিহত হারুন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চা খাচ্ছিলেন। এ সময় একটি রামদা নিয়ে ঘাতক রুবেল অর্তকিতে হারুন ডাক্তারের উপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে হারুন দৌড়ে ৫০ গজ দূরে সনি সিনেমা হলের সামনে গিয়ে পড়ে যান। সেখানেই রামদা দিয়ে এলাপাথাড়ি কুপিয়ে হারুনের মৃত্যু নিশ্চিত করে সদর্পে গয়েশপুর বাজারের তার বাসায় চলে যায় ঘাতক রুবেল। খবরটি মুহূতের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ঘাতক রুবেলের বাড়ি ঘেরাও করে। আত্মরক্ষার্থে রুবেল তার নিজ বাড়িতে আগুন দেয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ঘাতক রুবেলকে ধরে ফেলে গণপিটুনি দেয়। রুবেলের মা বিউটি আক্তার রুবেলকে বাঁচাতে এলে বিউটি আক্তারও গণপিটুনির শিকার হয়। এ সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পাগলা থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আনতে ৪টি ফাঁকা গুলি করে। নিহত হারুন অর রশিদের ভাই কামরুল মেম্বার বলেন, বখাটে নেশাগ্রস্ত রুবেল মাদককারবারি ও কুখ্যাত ডাকাত। অনেক নারীর ধর্ষণকারী। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমার ভাইকে সে প্রকাশ্যে খুন করেছে। আমাকেও খুন করতে চেয়েছিল। প্রকাশ্যে দিবালোকে বাজারে এমন লোমহর্ষক ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে পাগলা থানার ওসি খায়রুল বাশার জানান, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়মনাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘাতককে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।