ঝাল খাবার অনেকেরই প্রিয়। তবে ঝাল সহ্য করতে পারেন না- এমন মানুষের সংখ্যাও নিতান্ত কম নয়। গত কয়েক বছরে স্পাইসি ফুড বা ঝালজাতীয় খাবার নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল। এতে দেখা যায়, ঝাল খাবার বা মরিচ যারা বেশি খেয়েছেন, তারা বেশি দিন বেঁচেছেন। ৪ লাখ, ৮৭ হাজার ৩৭৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, যারা ঝাল খাবার খান না, তাদের তুলনায় যারা ঝাল খাবার খান, তাদের মৃত্যুঝুঁকি কমেছে প্রায় ৭ বছর পর্যন্ত। হার্বাট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে তিন থেকে সাত দিন ঝাল খাবার খান তাদের মৃত্যুঝুঁকি যারা সপ্তাহের একবার খান বা একেবারেই খান না, তাদের তুলনায় কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ পর্যন্ত। এখানে একটি বিষয় গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, ঝাল খাবারে উপকারিতা আসে মূলত ক্যাপসেইসিন নামক উপাদান থেকে। এটি একটি সক্রিয় জৈব উপাদান, যা মরিচে পাওয়া যায়। এছাড়া ক্যাপসেইসিন চর্বি কমায়, সংক্রামক ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করে। অন্যদিকে কিডনি, ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে এ উপাদানটি। ঝাল খাবারের প্রতিরক্ষামূলক উপাদান কাপসেইসিনের ভূমিকার প্রমাণ-সাপেক্ষে ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে গবেষকরা দেখিয়েছেন, মরিচের মধ্যকার রাসায়নিক এ উপাদানটি পাকস্থলীর কোষসহ বিভিন্ন উদ্দীপকে সাড়া দিতে সক্রিয় করে তোলে। ফলে টিউমার বেড়ে উঠতে পারে না। লস এঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফল হিউম্যান নিউট্রিশনের এক গবেষণার উপাত্ত বলছে, ঝালজাতীয় খাবার শরীরের বাড়তি ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে। এক চা চামচেরও কম লাল মরিচের ব্যবহার ক্ষুধা কমায় ও বাড়তি ক্যালরি কমায় বলে গবেষকদের অভিমত। গবেষকদের পরীক্ষার ফল অনুযায়ী, সপ্তাহে এক বা দুই দিন খাবারের কিছু অংশ ঝাল খাবার রেখে প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। গবেষণায় আরো বলছে, যারা সপ্তাহে ছয় বা তার বেশি দিন কাঁচামরিচ ও ঝালজাতীয় খাবার খান তাদের ক্যান্সার ও মৃত্যুঝুঁকি ১১ শতাংশ পর্যন্ত কমে।