বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো রয়েছে- উল্লেখ করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আগামী ৫ বছর নতুন সরকারের সঙ্গে আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে। গতকাল সচিবালয়ে পলকের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পলক।
বিভিন্ন মহল বলছে নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নিলেও নিতে পারে, আওয়ামী লীগের একজন এমপি হিসেবে আপনি কি মনে করছেন সম্পর্ক মধুর হওয়ার দিকে যাচ্ছে?
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পলক বলেন, আমি মনে করি যে আমাদের নতুন সরকারের নতুন মন্ত্রিসভার একজন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি দেশের একজন রাষ্ট্রদূত দেখা করার এবং এর মধ্য দিয়ে ব্যবসা, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, উদ্ভাবন- এগুলো নিয়ে আলোচনা করার মধ্যদিয়ে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারেন যে, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো রয়েছে। আগামী পাঁচ বছর নতুন সরকারের সঙ্গে আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সেটাই মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশের ব্যাপারে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো খুব আগ্রহী এবং আমেরিকার রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, উনার যে বিভিন্ন বিষয়ে কথা এবং আলোচনার বিষয় বস্তু, এগুলো থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার ভবিষ্যতে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সম্ভাবনার সম্পর্ক এটা আরো বেশি সম্প্রসারিত হবে, আরো ঘনিষ্ঠ হবে। আগামী ২০৪১ সালে প্রধানমন্ত্রীর যে স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প সেটি পূরণের জন্য আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের যে হাত বাড়িয়েছি সেখানে আমেরিকার বন্ধুত্ব আরো সুদৃঢ় হবে এবং আমরা একসঙ্গে কাজ করব দুই দেশের জনগণের জন্য, সারা বিশ্বের জন্য। আমার কাছে আজকের বৈঠক থেকে এটাই মনে হয়েছে, বলেন প্রতিমন্ত্রী। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশের গড়ার যে রূপকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, সেটা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে আজ কথা হয়েছে। পলক বলেন, আমাদের আলোচনার মূল তিনটি উদ্দেশ্য ছিল, আমেরিকা আমাদের সফটওয়্যার ও ফ্রিল্যান্সারদের আউটসোর্সিংয়ের সবচেয়ে বড় গন্তব্য। যে ৬০টি দেশে আমরা সফটওয়্যার রপ্তানি করি, আমেরিকায় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়। আমেরিকায় আমাদের আউটসোর্সিংয়ের ক্লায়েন্ট (গ্রাহক) অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশি। কীভাবে এটা আরো বাড়াতে পারি, সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।
তিনি বলেন, ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসোর্স ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন করার বিষয়েও কথা হয়েছে। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়েও সরকার কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশের ডাক বিভাগের সঙ্গে আমেরিকার কীভাবে জি-টু-জি সহযোগিতা হতে পারে এবং আমেরিকার যে কোম্পানিগুলো আছে, বিশেষ করে অ্যামাজন, স্টারলিং, স্পেসএক্স, গুগল ও ফেসবুকের বিনিয়োগ কোন কোন ক্ষেত্রে আরো বেশি হতে পারে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি। তিনি অএরা বলেন, সব মিলিয়ে বলতে পারি, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পেতে পারি এবং একসঙ্গে কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারি, রপ্তানি ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমেরিকার প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। গত ৫ বছরে এ খাতে ২৮ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। আবার বাংলাদেশে এখন ওরাকল, মাইক্রোসফটসহ বেশ কিছু আইটি কোম্পানি কাজ করছে। আরো অনেক কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আকর্ষণ করতে চাই। সর্বশেষ সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন, সেগুলো নিয়ে কথা হয়েছে।