উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহর মৃত্যুর এক মাস পর দেশটিতে নতুন সরকার গঠন করা হয়েছে। কুয়েতের নতুন আমির ও প্রধানমন্ত্রীর অধীনে গতকাল দেশটির প্রথম সরকার গঠন করা হয় বলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। কুয়েতের সরকারি সংবাদ সংস্থা কুনা বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ সাবাহ আল-সালেম আল-সাবাহর নেতৃত্বে কুয়েতের নতুন সরকার গঠন করা হয়েছে। কুয়েতের পূর্ববর্তী শাসকের মৃত্যুর পর দেশটিতে এটাই প্রথম মন্ত্রিসভা। শেখ মোহাম্মদ কুয়েতের নতুন আমির শেখ মেশাল আল-আহমাদ আল-সাবাহর অধীনে গঠিত প্রথম মন্ত্রিসভায় তেল, অর্থ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক নতুন মন্ত্রীদের নিয়োগ করা হয়েছে। আমিরের নির্দেশনা মেনে মন্ত্রিসভায় পরবর্তীতে সংস্কার আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কুয়েতের এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা কুয়েতের ইতিহাসের একটি নতুন পর্বের গুরু দায়িত্ব যেখানে রয়েছে চ্যালেঞ্জ আর আকাঙ্ক্ষা। এজন্য আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ দেশটির তেলমন্ত্রী হিসেবে এমাদ মোহাম্মদ আল-আতিকি, অর্থমন্ত্রী আনোয়ার আলী আল-মুদাফ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ আলী আল-ইয়াহিয়াকে নিয়োগ দিয়েছেন।
এর আগে, গত ১৬ ডিসেম্বর কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ মারা যান। তার মৃত্যুর পর কুয়েতের নতুন আমিরের দায়িত্ব নেন শেখ মেশাল আল-আহমাদ আল-সাবাহ। তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপসাগরীয় আরব ঐক্য, পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন জোট ও সৌদি আরবের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে কুয়েতের পররাষ্ট্র কল্যাণবিষয়ক নীতি মেনে চলবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
কুয়েতকে শাসক পরিবারের সাথে সমালোচকদের দীর্ঘদিন ধরে টানাপড়েন চলমান আছে। সংসদে বিরোধীদের সাথে সরকারের অচলাবস্থা দেশটির আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারকে বাধাগ্রস্ত করেছে। নতুন সরকারকেও একই ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যান্য উপসাগরীয় রাজতন্ত্রের যেকোনো নির্বাচিত সংস্থার চেয়ে বেশি ক্ষমতা রাখে কুয়েতের আল-সাবাহ পরিবার। দেশটির যেকোনো সরকারি এবং নির্বাহী পদের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাদের। দেশটিতে আমির পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া এবং নির্বাচন ডাক দেওয়ার ক্ষমতাও রাখেন। এমনকি রাজনৈতিক বিষয়ে আমিরের কথাই শেষ কথা বলে স্বীকৃত। তবে পার্লামেন্টের বিরোধী দল প্রকাশ্যে সাবাহদের সমালোচনা করতে পারেন। সূত্র : রয়টার্স, আলজাজিরা।