তিন কিমি.র কাজ দৃশ্যমান

যমুনা নদীর বুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

যমুনা নদীর বুকের উপর স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এরমধ্যেই এ সেতুর প্রায় ৩ কিলোমিটার কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। এ রেলসেতুর কাজসম্পন্ন হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমা ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগে আরো উন্নতি হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তর পাশে দেশের সর্ববৃহৎ এ রেলওয়ে স্থাপনার কাজ এরইমধ্যে ৩ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। ২০২১ সালের মার্চ মাসে সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এ রেলসেতু নির্মাণে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে। এরমধ্যে ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেনচার। যমুনা নদীর পূর্বপাড় টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর প্রান্তে সেতুর ২৪ থেকে ৫০ নম্বর পিলার পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। আর ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেনচার। যমুনা নদীর পশ্চিমপাড় সিরাজগঞ্জ প্রান্তে ১ থেকে ২৩ নম্বর পিলার পর্যন্ত সেতুর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছেন তারা এবং এ সেতুর উভয়পাড় দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজ করছে। এ সেতু নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। সেতুর ৫০টি পিলার, দুটি পিলারের মাঝে একটি করে অর্থাৎ ৪৯টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার। প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীর সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বলেন, এরইমধ্যে ৪৩টি পিলার স্থাপন শেষ হয়েছে। বাকি ৭টি পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। ৩১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এতে সেতুর ৩ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার দৃশ্যমান। প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানি প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। এতে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে এবং প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন তিনি। প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পের কাজ সব মিলিয়ে ৭৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজ আগস্টেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু অপর প্যাকেজটির কিছু কাজ বাকি থাকবে। চুক্তির মেয়াদ ৩-৪ মাস বাড়াতে হতে পারে। ডিপিপির মেয়াদ ২০২৫ পর্যন্ত রয়েছে। মেয়াদের আগেই চুক্তি অনুযায়ী শেষ হওয়ার কথা এবং কিছুটা পিছিয়ে আছে ডব্লিউডি-২ প্যাকেজ। উল্লেখ্য, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে এবং এ রেলসেতু নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেলসেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ রেলসেতু চালু হলে উত্তরাঞ্চলসহ দেশে আরো উন্নয়ন ঘটবে বলে বিশিষ্টজনরা এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।