৮১ হাজারের বেশি কোটা ফাঁকা রেখেই শেষ হলো হজ নিবন্ধন
সৌদির অনুমতি না মেলায় আর বাড়ছে না সময়
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
হজ নিবন্ধনের দ্বিতীয় দফার সময় শেষ হয়ে গেছে গত রাতে। গতকাল বিকেল ৩টা পর্যন্ত পবিত্র হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৪৪ হাজার ২৯৭ জন। এখনও ফাঁকা ৮১ হাজার ৯০৪ কোটা। যদিও রাত ১২টা পর্যন্ত নিবন্ধন করার সুযোগ রয়েছে। শেষ সময়ে আরো হাজার তিনেক ব্যক্তি নিবন্ধন করতে পারেন বলে আশা করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে সময় আর বাড়ছে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
গতকাল বিকেল ৩টায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের প্রধান অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম জানান, হজের নিবন্ধনের সময় আর বাড়ছে না। সৌদি আরব আমাদের আর কোনো সময় দিচ্ছে না। এরইমধ্যে সৌদির অনুমতি নিয়ে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে আর সময় বাড়ছে না।
তিনি বলেন, গত বছর সৌদি সরকার সময় দিয়েছিল তাই আটবার সময় বাড়ানোর সুযোগ ছিল। এবার সেই সুযোগ দিচ্ছে না। আজকের (গতকাল) মধ্যেই সৌদি আরবকে কতজন হাজ করতে যাবেন এবং বিমানের ফ্লাইটের শিডিউল জানাতে হবে। তাই ইচ্ছে থাকলেও আরও সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই।
সব মিলিয়ে ৮০ হাজারের বেশি কোটা ফাঁকা রেখেই চলতি বছরের হজ নিবন্ধন শেষ হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত বছর নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় ৮বার সময় বাড়ানো হয়। এরপরও শেষ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি কোটা ফেরত যায়। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে এবারের হজ নিবন্ধন শুরু হয় এবং সময়সীমা ছিল গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে হজ নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু নিবন্ধনের কাঙ্ক্ষিত সাড়া মিলছে না। চলতি বছরও বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত কোটা রয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। কিন্তু গতকাল বিকেল ৩টা পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৪৪ হাজার ২৯৭ জন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় ৩ হাজার ৭৪৯ জন ও বেসরকারি কোটায় ৪১ হাজার ৫৪৫ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। ফলে দ্বিতীয় দফায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধির পরও প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কোটা পূরণ হচ্ছে না।
এত সংখ্যক ফাঁকা রেখে নিবন্ধনের সময় শেষ করবেন এমন প্রশ্নে মতিউল ইসলাম বলেন, আমাদের কিছু করা নেই। কারণ সৌদি সরকার সময় বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে না। চলতি ২০২৪ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আর বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। অপরদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। যদিও গত বছরের চেয়ে এ বছর সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ১ লাখ ৪ হাজার ১৬০ টাকা কমানো হয়েছে, তবুও বর্তমান হজ প্যাকেজের মূল্যকে অনেক বেশি মনে করছেন হজে যেতে আগ্রহীরা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আগ্রহী হজযাত্রীরা শুরুতে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন এবং প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে প্রাথমিক নিবন্ধন করার পর ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবশ্যিকভাবে প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমার মাধ্যমে চূড়ান্ত নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।