পঞ্চগড়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

তাপমাত্রা ৮.৭ ডিগ্রি স্কুল বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ে তৃতীয় দফায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নেমে রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রায় জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সকালে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা গেছে। ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হলে স্কুল বন্ধ রাখার কথা থাকলেও সকাল ১০টার পরও অনেক স্কুল খোলা থাকতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা স্কুল বন্ধের কোনো খবর না পেয়ে তারা স্কুলে ছুটে আসেন। পরে তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি রেকর্ড রিপোর্ট দিলে স্কুলগুলোর শিক্ষকরা জানতে পারেন। এদিকে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে স্কুলের পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিলে তারা শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দেন। বেলা ১১টার দিকে তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান, হারাদিঘী, ফকিরপাড়া ও রনচন্ডী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানান, ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হলে স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও সকাল ৯টায় দেয়া হয় তাপমাত্রার রিপোর্ট। এ কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে চলে আসে। পরে জানতে পারি তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে। জানার পর শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দেয়া হয়।

এদিকে শৈত্যপ্রবাহ ও টানা তীব্র শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এ জেলার নানান বয়সী মানুষ। শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগের শিশু আক্রান্ত হচ্ছে। তারা জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তির খবর পাওয়া গেছে।

জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, শীতের কারণে প্রচুর রোগী শীতজনিত রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। ডায়রিয়া, হাপানি, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক রোগী। এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু। এজন্য শিশুদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিহিস্টামিন ও অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে।

তেঁতুলিয়া মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী জানান, আজকের তাপমাত্রা রেকর্ড অনুযায়ী বিষয়টি আমরা জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা দিলে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামলে সে অনুযায়ী আগামীতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পঞ্চগড় জেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফ্জ্জুামান জানান, জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যাবেক্ষণাগারের কার্যালয়ের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় জেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শুধুমাত্র শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল মালেক বলেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসা সাপেক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জেলার প্রথম শ্রেনির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গতকাল সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় এ অঞ্চলে এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। তবে বেলা ১১টার পর সূর্য দেখা দেয়া রোদের কারণে তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে সামনে আরো তাপমাত্রা কমতে পারে বলে জানান তিনি।