ঢাকা ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাজধানীর বাজারদর

কমেছে মুরগি পেঁয়াজ ও আলুর দাম শীতের সবজির বাজার স্থিতিশীল

কমেছে মুরগি পেঁয়াজ ও আলুর দাম শীতের সবজির বাজার স্থিতিশীল

সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম কমেছে। একই সঙ্গে উৎপাদন বাড়ায় নতুন পেঁয়াজ ও আলুর দামও কমেছে। তবে শীতকালীন সবজির বাজার স্থিতিশীল আছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পণ্যের এই মূল্য পরিস্থিতি বিরাজ করতে থাকে।

বাজারে চলতি সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। যা গত সপ্তাহে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। বাজারে সোনালি কক, সোনালি হাইব্রিড কক ও লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। বাজারগুলোতে সোনালি কক ৩০০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৯০, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫২০ ও লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে মুরগির দাম কমায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। তবে মুরগির দামের কারণে বিক্রি তুলনামূলক কমেছে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ ব্যাপারে মুরগি বিক্রেতারা জানান সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। দুই মাস ধরেই মুরগির বাজারে অস্থিরতা চলছে। এতে করে আমাদের বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে। তবে পাইকারি বাজারে দাম কমায় আমরাও দাম কমিয়ে বিক্রি করছি।

চলতি সপ্তাহে নতুন পেঁয়াজ ১০ টাকা কমে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ দেশিটা (পুরাতন) ১০০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শীতকালীন সবজি দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে নতুন আলুর কেজিতে ১০ টাকা কমে ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও এই আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৭০, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০, কাঁচা টমেটো ৩০, কচুরমুখী ১০০ এবং গাজর ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা ও বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল বাজারে বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, করলা ৭০, ঢেঁড়স ১০০, পটল ৮০, বরবটি ১২০, ধুন্দুল ৮০, চিচিঙ্গা ৮০, খিরাই ৪০ থেকে ৫০, শশা ৬০, পেঁপে ৪০, ধনে পাতা ১০০ থেকে ১৫০, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, নতুন আলু ৬০, নতুন উঠা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯০ টাকা কেজি দরে, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০, পেঁয়াজের ফুলকলি ৬০ ও কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া প্রতিটি লাউ বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০, কলা হালি বিক্রি হয়ে ২০ টাকায় ও জালি কুমড়া ৪০ টাকা প্রতিটি বিক্রি হয়। এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০, মূলা শাক ১০ থেকে ১৫, পালং শাক ১৫ ও কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১০৫০-১১০০ টাকায় বিক্রি হয়। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকা। গতকাল এসব বাজারে মাছের দাম অপরিবর্তিত আছে। বাজারগুলোতে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হয় ৭০০ টাকা, এক কেজি শিং মাছ (চাষের, আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৫০০, রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৫৫০, মাগুর মাছ ৭০০ থেকে ৯০০, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০, পাঙাস ২০০ থেকে ২২০, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০, বোয়াল মাছ ৪০০ থেকে ৯০০, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০, তেলাপিয়া ২২০, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০, মলা ৫০০, বাতাসি টেংরা ৯০০, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৭০০, কাচকি মাছ ৬০০, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০, রুপচাঁদা ১০০০, বাইম মাছ ১০০০ থেকে ১২০০, দেশি কই ১০০০, সোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০, আড়ই মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। রমজানে নিত্যপণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখার আশ্বাস ব্যবসায়ীদের আসন্ন রমজান মাসে বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বজায় রাখার আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলামকে তাঁরা এই আশ্বাস দেন। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ভোজ্যতেল ও চিনির আমদানি, মজুদ এবং মূল্য পরিস্থিতির পর্যালোচনা সভার আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সভাশেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করাই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এজন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারীদের সাথে আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বাজারে বিশেষ করে রমজান মাসে ভোজ্যতেল ও চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে-কেউ যেন পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে। কেউ কৃত্রিমভাবে পণ্যের মজুত করলে, সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আহসানুল ইসলাম বলেন, আমার বিশ্বাস দেশে যারা ব্যবসায়ী আছেন তারা সবাই দেশপ্রেমিক। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা নিয়ে সিন্ডিকেট শব্দের ব্যবহার ভুলে যেতে চাই। সিন্ডিকেট মুক্ত স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা গড়তে চাই। ভোক্তাবান্ধব বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা এমন একটা বাজার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করতে চাই যেখানে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বড় ধরনের দুর্যোগ না হলে দেশে পণ্য সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না। সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আমদানির ক্ষেত্রে ডলার সংকটের পাশাপাশি গ্যাস সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, সরকার নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করলে দেশে কোনো পণ্যের ঘাটতি থাকবে না। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডলার সংকট সমাধানে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং গ্যাসের স্বল্পতা দূর করতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত