চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নে হালদা নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই মাটি বিক্রি করে চলছে রমরমা বাণিজ্য। জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে অবিরাম মাটি কাটার ফলে হালদার পাড় বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। পাইন্দং ইউনিয়নের ফকিরাচাঁন এলাকায় রাতে হালদার পাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় ব্রিক ফিল্ড এলাকায় মাটিভর্তি গাড়ি পারাপারে নদীর ওপর তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী সেতু। এছাড়া একই ইউনিয়নের সেবাখোলা, পাট্টিল্যার কুল ও যুগিনীঘাটা এলাকা হতে হালদার পাড়ের মাটি কেটে ড্রামট্রাকে করে পার্শ্ববর্তী ইটভাটাতে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, নির্বিচারে নদীর পাড় কাটার ফলে বিলীন হতে পারে পাড় রক্ষায় নির্মিত বেড়িবাঁধ। পাড় রক্ষায় নির্মিত এ বাঁধটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৫৭ কোটি টাকা। যা সিসি ব্লক দিয়ে তৈরি। পাড় বিলীন হওয়ার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য হারিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হ্যারিটেজ ঘোষিত হালদা নদী। বর্ষাকালে বৃষ্টিতে প্লাবিত হতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় ইটভাটাগুলোতে বালু মিশ্রিত এসব মাটির চাহিদা থাকায় তা চড়া দামে বিক্রি করছে প্রভাবশালীরা। অপরদিকে সিন্ডিকেটের সদস্যরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে দেদারছে বিক্রি করছে। সম্প্রতি ফকিরাচাঁন এলাকায় প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও ফের মাটি-বালু বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এসব মাটি ও বালুর গাড়ি চলাচলের কারণে স্থানীয় সড়কগুলো খানাখন্দকে পরিণত হয়েছে। ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বাসিন্দাদের জীবন।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, কোনো অবস্থাতেই হালদার পাড় কাটা কিংবা এ নদী থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না। যারা এ কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে নদী সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় সম্পদে সমৃদ্ধ হালদা হুমকির মুখে পড়বে।