নাটোরের হালতিবিলে সমলয় প্রযুক্তিতে ১৫০ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড হিরা-২ জাতের বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এ প্রযুক্তিতে নলডাঙ্গার ৫০ জন কৃষক চাষাবাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ জাতের রোরো ধান চাষাবাদে সরকার প্রায় ১৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা প্রণোদনা দিয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি দুপুরে নলডাঙ্গা উপজেলার হালতিবিলে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার মেশিনে বোরো ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ, নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেওয়ান আকরামুল হক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) শামসুন নাহার ভুঞা, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (পিপি) কল্যাণ প্রসাদ পাল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাকিবুল হাসান, নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফৌজিয়া ফেরদৌস, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. কিশোয়ার হোসেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. সাজ্জাদ হোসাইন প্রমুখ। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সমলয় প্রযুক্তিতে চাষাবাদ হলো নির্দিষ্ট সময়ে একই জাতের ফসল চাষাবাদের মাধ্যমে ফসলের রোপণ ও কর্তনে সময় হ্রাস করার পদ্ধতি। এছাড়া এতে উৎপাদন খরচও কমে। সাধারণত ট্রেতে করে পলিথিন মোড়ানো হাউজে বীজতলা তৈরি এবং পরম যত্নে মাত্র ১৮ থেকে ২০ দিনেই রোপণের উপযোগী চারা প্রস্তুত করা যায়। সেইসব পূর্ণাঙ্গ চারাগুলো রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারে লাইন লোগো পদ্ধতি ব্যবহার করে রোপণ করা হয় জমিতে। নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সময়লয় পদ্ধতিতে বোরো চাষাবাদে বীজতলা তৈরি থেকে ধান রোপণের জন্য ১৪৫ থেকে ১৫০ দিন সময় লাগে। এতে প্রতি বিঘায় গড় ফলন হয় ৩৫ থেকে ৪০ মণ। গৌরিপুর এলাকার কৃষক আব্দুল মতিন জানান, এই পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে মাত্র ২০ দিনের মাথায় তারা চারা রোপণ করতে পারছেন। রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারে লাইন লোগো পদ্ধতি ব্যবহার করে চারা রোপণ করা হচ্ছে জমিতে। এতে চারাগুলো সতেজ থাকছে এবং নষ্ট বা অপচয় হচ্ছে না। নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফৌজিয়া ফেরদৌস বলেন, সব প্রযুক্তির সমাহারে গড়ে তোলা এই স্কিমকে সফল এবং মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে কৃষি বিভাগ সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আশা করি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরাও স্বল্প সময়ে বোরো ধানে অধিক ফলন পাবেন। নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, নাটোরে ৫০ জন কৃষক এ পদ্ধতিতে ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছেন। এতে খরচ তুলনামূলক কম, শ্রমিক সংকট নিরসন ও সময় সাশ্রয় হবে। এতে করে কৃষকরা লাভবান হবেন। অন্যরাও এভাবে বোরো ধান চাষে আগ্রহী হবেন। এছাড়া হিরা ধান উৎপাদনে সরকার কৃষকদের প্রণোদনা ও সহায়তা দিচ্ছে।