ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষ্যে মতবিনিময়

শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে পরীক্ষা থাকা জরুরি

শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে পরীক্ষা থাকা জরুরি

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিকল্প নেই। তবে সব জায়গা একরকম নয়। যেসব স্কুলে শিক্ষার্থী কম, ৩০ জন বা কম, সেখানে সহজে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা সম্ভব। তবে যেখানে শিক্ষার্থী ১৫০ জন, সেখানে এভাবে করা যায় না। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার পদ্ধতি থাকাটা জরুরি।

গতকাল বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এডুকেশন ওয়াচের সহযোগিতায় গণসাক্ষরতা অভিযান এই সভার আয়োজন করে। রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অবৈতনিক হলেও মা-বাবাকে সন্তানদের জন্য ৭১ শতাংশ শিক্ষাব্যয় করতে হয়। বিশেষ করে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের মতো প্রথমসারির স্কুলগুলোর ফি দিতে দিতে অভিভাবকরা নিঃস্ব হয়ে যান। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের প্রসঙ্গ টেনে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, এসব স্কুলের ফি দিতে দিতে মা-বাবাদের পকেটের টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এদের উচিত ফি কমিয়ে শিক্ষাকে সহজ করা। শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা নীতিমালা মেনে চলেন। কোচিং বাণিজ্য থেকে বের হয়ে আসেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষকরা বলেন, কোচিং বাণিজ্যের জন্য শিক্ষকরা একা দায়ী নন। অভিভাবকরা মনে করেন কোচিংয়ে না পড়ালে ছেলেমেয়েরা ভালো ফল করতে পারবে না। এ ধরনের মানসিকতা থেকে বের না হলে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে না।

ঢাকার বড় বড় স্কুলকে ডোনেশন নেয়া থেকে নিবৃত্ত হওয়ার আহ্বান জানালে শিক্ষকরা জানান, যারা ডোনেশন নেয়ার বিপক্ষে নীতিমালা করছেন, তারাই আবার সন্তান ভর্তির জন্য তদবির করতে আসেন। এতে নীতিমালা কাজে আসে না।

অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বলেন, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি টাকা পাচ্ছে। আরেকটু বেশি টাকা খরচ করে এসব প্রতিষ্ঠানকে সরকারিকরণ করা যেতে পারে। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে অনুরোধ থাকবে, যাতে বিষয়টি বিবেচনা করেন।

ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, চলার পথে শিক্ষার কিছু পরিবর্তন হবেই। তবে পুরোটাই কিছুদিন পরপর পরিবর্তন করার ফলে শিক্ষা খাতে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কিছু বাস্তবায়ন। নীতি বা আমাদের কর্মসূচির কোনো সমস্যা নেই এমনকি আমাদের অনেক জায়গায় বরাদ্দেরও সমস্যা নেই। শুধু বাস্তবায়ন হয় না। সঠিকভাবে যদি আমরা বাস্তবায়ন না করতে পারি তাহলে পরিকল্পনা করে কোনো লাভ নেই। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযানের ডিপিএম সামছুন নাহার।

এদিকে গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস পালিত হয়। ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রতি বছরের ২৪ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ‘স্থায়ী শান্তির জন্য শিক্ষা গ্রহণ’ এই প্রতিপাদ্যে গতকাল বিশ্বের দেশে দেশে সরকারি-বেসরকারি আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস’ পালিত হয়। তবে বাংলাদেশে ১৭ সেপ্টেম্বর বেসরকারিভাবে শিক্ষা দিবস উদ্যাপিত হয়।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবে সারা বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার হুমকি বিবেচনায় দিবসটির গুরুত্ব বেড়েছে অনেক দেশে। এ বছর আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ইউনেস্কো ২৪ জানুয়ারি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তির জন্য শিক্ষাবিষয়ক সংলাপের আয়োজন করেছে।

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং চলমান কর্মসূচি, শান্তির জন্য শিক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জাতিসংঘ অধিভুক্ত বিভিন্ন এনজিও, শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষা অংশীজন, যুব প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন। একই সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের একান্ত সহযোগিতায় শিক্ষা ও জীবনব্যাপী শিক্ষার জন্য গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস নিয়ে ইউনেস্কো বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত